মার্চ ১৮, ২০২৩, ০৮:২১ পিএম
সকালে বাংলাদেশে নেমেই গ্রেপ্তার হলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। আদালতের আদেশে কারাবাস পেলেন। সাড়ে তিন ঘণ্টার জেলবাসের পর জামিন মিললো নায়িকার। কারাগার থেকে বের হয়েই সংবাদ সম্মেলন করলেন মাহিয়া মাহি।
শনিবার (১৮ মার্চ) রাত ৮টার দিকে গাজীপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এসে মাহি বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন নয়, আমার অভিযোগ ছিল ব্যক্তিবিশেষের ওপর। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই দেশে ফিরে এসেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘আমি কারাগারের ভেতরে অনেক শান্তিতে ছিলাম। আমাকে যখন বিমান থেকে নিয়ে আসে তখন ইমিগ্রেশনের পুলিশ আমাকে কারও সঙ্গে কথা বলতে দিবে না, পুরো এয়ারপোর্ট ফাঁকা হয়ে গেছে।’
মাহিয়া মাহি আরও বলেন, ‘আমি ভীতসন্ত্রস্ত। আমাকে যে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমাকে একটা গাড়িতে আনা হয়েছে সেটা অনেক গরম ছিল। আমি ঠাণ্ডা পানি চাচ্ছিলাম। একটু পরপর আমার তৃষ্ণা পাচ্ছিল। তারা একটা পানি কিনে দিতে এক ঘণ্টা সময় নিয়েছে।’
গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মো. আনোয়ারুল করিম বলেন, ‘আমরা জামিনের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে কারাফটকে এনেছি। পরে ৭টা ৫০ মিনিটে তার স্বজনরা এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’
এর আগে বিকেলে মাহির জামিন মঞ্জুর করে কারামুক্তির আদেশ দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন।
মাহির আইনজীবী জানান, প্রেগনেন্সি ও সেলিব্রেটি বিবেচনায় আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন।
এর আগে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় দুপুর ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে মাহিকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের আদেশে তাঁকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
স্বামীর সাথে ওমরাহর উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন মাহিয়া মাহি। সেখান থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফেসবুক লাইভে দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এই আশঙ্কা প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হলেন নানা কারণে আলোচিত ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই নায়িকা।
মাহিকে গ্রেফতারের পর জিএমপি কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘মাহিয়া মাহি জমি সংক্রান্ত ঘটনায় পুলিশ বিভাগ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ব্যাপারে ফেইসবুক লাইভে মিথ্যা মন্তব্য করেছেন। তিনি প্রতিপক্ষের ব্যাপারেও বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।”
শুক্রবার ফেসবুক লাইভে এসে মাহিয়া মাহি বলেন, “গাজীপুরে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। সেখানে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। তারা শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে আসবাব, দরজা-জানালা, টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেছে। শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেছে। অফিসকক্ষ তছনছ করে টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে গেছে।”
মাহির অভিযোগ, ইসমাইল ওরফে লাদেন ও মামুন সরকার নামে দুজনের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ তাদের শো রুম দখল করে নিয়েছে। এ সময় ফেসবুকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন মাহি।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় এসআই রোকন মিয়া বাদী হয়ে মাহিয়া মাহি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। জমি দখলের অভিযোগে অন্য মামলাটি করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।