একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আব্দুল খালেক মণ্ডল ওরফে জল্লাদ খালেকসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শহিনুর ইসলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
এর আগে শুনানি শেষে এ মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখেছিলেন। এ মামলায় আসামি খালেক মণ্ডলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, পলাতক খান রোকনুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর ছিলেন মোখলেসুর রহমান বাদল ও রেজিয়া সুলতানা চমন। ২০১৫ সালের এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় ২০১৮ সালের ৫ মার্চ। মামলার চার আসামির মধ্যে আব্দুল্লাহ আল বাকী এবং জহিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কা খান নামের দুই আসামি বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান। বাকি দুই আসামির মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাতক্ষীরা সদর আসনের সাবেক এমপি আব্দুল খালেক মণ্ডলকে তদন্তের সময় গ্রেপ্তার করা হয়। আর খান রোকনুজ্জামান এখনও পলাতক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সাতক্ষীরা এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। চূড়ান্ত যুক্তিতর্কে প্রসিকিউশন দুই আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চায়। আর আসামি পক্ষ অভিযোগ থেকে আসামিদের খালাস চেয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ৫ ব্যক্তিকে জবাই ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর আসনে জামায়াতের সাবেক সাংসদ আব্দুল খালেক মণ্ডলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২ জুলাই মামলা করেন সদর উপজেলার শিমুলবাড়িয়া গ্রামের শহীদ রুস্তম আলী গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী। পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
২০১৫ সালের ৭ অগাস্ট এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। প্রায় দেড় বছর পর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তদন্ত সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৭টি অভিযোগ আনা হলেও যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রসিকিউশন ৬টি অভিযোগ চূড়ান্ত করে। এ মামলায় তদন্ত সংস্থা ৩৩ জনকে সাক্ষী করলেও প্রসিকিউশন তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের সাক্ষ্য নেয়।