দুই মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর দেশব্যাপী ফের শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী গণটিকাদান কার্যক্রম।
সোমবার (১২ জুলাই)করোনাভাইরাসের অতিমাত্রার সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে এই গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
এর আগে রবিবার (১১ জুলাই) দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর টিকা সেন্টারগুলোতে টিকা পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক রবিবার গণমাধ্যমে বলেন, সোমবার (১২ জুলাই) থেকে সারা দেশে চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা সিনোভ্যাকের গণটিকাদান শুরু হচ্ছে। এখন ঢাকার সাতটি কেন্দ্রে প্রবাসীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীরা মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) থেকে ঢাকা ছাড়াও দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন থেকে মডার্নার টিকা নিতে পারবেন। ঢাকায় আসতে হবে না।’
এদিকে, দুই মাস বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় দফায় ৭ জুলাই টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়। এ দফায় রবিবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৯ লাখ ৫৫ হাজার। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত টিকা নেওয়ার জন্য মোট ৯০ লাখ ৫৩ হাজার ৩৮৪ জন নিবন্ধন করেছেন।
গত ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা (কালো কোট পরা) প্রথম টিকা নেন। ছবি: বিবিসি বাংলা
এর আগে, গত ২৭ জানুযায়ি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভারতের কাছ থেকে পাওয়া সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। আর গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় দেশব্যাপী গণ টিকাদান কর্মসূচি। ওইদিন ঢাকাসহ সারা দেশের ১ হাজার ৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়।
পরবতীতে ভারত সরকার করোনা টিকা রপ্তানি বন্ধ করলে গত ২৫ এপ্রিল দেশে গণটিকাদান কর্মসূচিও বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে করোনার টিকা আসে। আর তাদের পাঠানো করোনাভাইরাস প্রতিরোধী সিনোফার্ম, ও ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দিয়েই সরকার দেশে ফের টিকাদান কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে এখন পর্যন্ত তিন ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে। মডার্নার টিকাদান শুরু হলে এ সংখ্যা চারে দাঁড়াবে। দেশে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে। এর মধ্যে ১ কোটি ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৪ জনকে এ টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪২ লাখ ৯৫ হাজার ২১৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র আরও জানায়, করোনা টিকা নিতে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে এখন ৩৫ বছর ও এর বেশি বয়সীরা নিবন্ধন করতে পারছেন।টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।