মে ১৮, ২০২২, ০৯:৫০ পিএম
বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় তা সবার জন্য ‘অশনিসংকেত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচক পর্য়ালোচনায় বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা এলার্মিং বলে বিএনপি মনে করছে বলেও তিনি জানান।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বাংলাদেশের বর্তমান যে অর্থনৈতিক অবস্থা যেটাকে আমি মনে করি এটা হচ্ছে এলার্মিং, এটা অশনিসংকেত আমাদের জন্য।”
তিনি বলেন, “অদূর ভবিষ্যতে আমরা যে শ্রীলংকার মতো বিপদে পড়তে পারি তার আশঙ্কাও আমাদের মধ্যে (স্থায়ী কমিটি) করা হয়েছে এবং সেই আশঙ্কা এখন আছে এবং এটাকে বাস্তবভিত্তিকই বলা যেতে পারে।”
গত ১৬ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পর্য়ালোচনা করে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে তা সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, রুপ্তানি এবং রেমিট্যান্স আয়ে ঘাটতির কারণে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। ঢাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জিনিসপত্রের দাম। মনে হচ্ছে আগামী দিনে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে উঠবে।”
রিজার্ভ নিয়ে আত্মতুষ্টির কিছু নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই অন্যতম শীর্ষ নেতা আরও বলেন, “ এটি দ্রুত কমে আসছে। গত আট মাসে রিজার্ভ ৪৮ বিলয়ন ডলার থেকে ৪২ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। পরের দুই মাসে এটা আরো ৪ বিলিয়ন ডলার কমে যাবে। এভাবে যদি রপ্তানির তুলনায় আমদানি বাড়তে থাকে এবং সেটা যদি রেমিট্যান্স দিয়ে পুরণ করা না যায় তাহলে অতি দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ শেষ হয়ে যাবে। রিজার্ভ শেষ হওয়ায় কি ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে শ্রীলংকার চলমান পরিস্থিতি তার নিকৃষ্টতম উদাহরণ।”
বাংলাদেশে এই মুহুর্তে যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে মাত্র পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ আমদানি ব্যয় আমাদের বেড়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। আমদানি যে হারে বেড়েছে, রপ্তানি যে হারে বাড়েনি। আবার প্রবাসী আয়ও কমে গেছে। ফলে প্রতি মাসে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।”
বর্তমান এই অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে বর্তমান বিভীষিকাময় অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতার জন্য জবাবদিহিহীন এই অবৈধ সরকারই দায়ী। দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষকে বাঁচানোর জন্য, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এই মুহুর্তে সার্বজনীন ঐক্যের মাধ্যমে রাজপথে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে অনতিবিলম্বে এই সরকারকে হটানোর বিকল্প নাই।”