আগস্ট ৯, ২০২১, ০১:০৫ এএম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকারি সংস্থা ও কারখানা মালিকের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। রবিবার (৮ আগস্ট) রাতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে তদন্ত কমিটি আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম ব্যাপারী জেলা প্রশাসকের কাছে ৪৪ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
করোনার ভাইরাস সংকটের কারণে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি বলে জেলা প্রশাসক জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন গণমাধ্যমে বলেন, ‘ওই কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ ছিলো না, বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। ছিলো না, ফায়ার সার্ভিসের এনওসি। সেই সাথে ফায়ার সেফটি ছিলো না। এছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়ে কারখানার মালিকের অনিয়ম পাওয়া গেছে তদন্তে।’
কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রম অধিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরও যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেনি। তারা ঠিকঠাকমতো দায়িত্ব নিয়ে মনিটরিং (তদারকি) করলে এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো যেত। তদন্তে কারখানায় নানা ধরনের অনিয়মের চিত্রও উঠে এসেছে।
আগুন লাগার কারণে সম্পর্কে তদন্ত কমিটি বলেছে, নিচতলায় কেন্দ্রীয় কমপ্রেসারের কক্ষে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়, দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত কারখানার ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের প্রথম সুপারিশে বলা হয়েছে যে, সেখানে শিশু শ্রম ছিলো। শিশু শ্রম যাতে করে বন্ধ করা হয় এ ধরনের কারখানা গুলোতে। দ্বিতীয়ত, যারা মারা গেছে তাদের শ্রম আইন অনুসারে ২ লাখ টাকা এবং যারা আহত হয়েছে তাদের আড়াই লক্ষ টাকা করে যেন মালিক পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। বিল্ডিং কোড মানা, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র আরো বেশি রাখা এবং প্রশিক্ষিত অগ্নিনির্বাপক দল কারখানায় রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, কারখানার নিচতলার কেন্দ্রীয় গুদামের কমপ্রেসারের রুমের এক পাশে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তা তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এছাড়াও তদন্ত কমিটি কারখানার প্রতি তলায় নেট দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরির প্রমাণ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ জনের মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে ৪৫ জনের লাশ পরিচয় শনাক্ত করার পর নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।