বরিশাল নগরের থানা কাউন্সিল (উপজেলা পরিষদ) কম্পাউন্ডে ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলা দুটিতে ৩০-৪০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার রাতের ঘটনায় দায়ের হওয়া ওই দুটি মামলার মধ্যে একটির বাদী বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান। অন্য মামলাটি পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আরও জানান, ইউএনও’র দায়ের করা মামলায় তার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ তোলা হয়েছে। অ্ন্যদিকে, পুলিশের মামলায় সরকারি কাজে বাধা দেয়া, পুলিশের ওপর আক্রমণ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।’
দুই মামলায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ বাবু ও রুপাতলী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শাহারিয়ার বাবুসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে নগরের কালিবাড়ি রোডে অবস্থিত সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র বাসভবন হঠাৎ করেই ঘিরে ফেলে র্যাব ও পুলিশের সদস্যেরা। সেখানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় মেয়রের বাসার ভেতরে নেতাকর্মীরা যেতে চাইলেও পুলিশ বাধ সাধে। তবে, কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেরা চলে যান।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরাঅবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন উচ্ছেদ করতে অভিযান চালাতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সকালে অভিযান চালাতে বলেন। ইউএনও’র কথা না মেনে তারা অভিযান চালানো শুরু করলে সিটি করপোরেশন কর্মী এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইউএনও’র সঙ্গে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা ইউএনও’র বাসভবনে হামলা চালায় বলে ইউএনও অভিযোগ করেন। ওইসময় ইউএনও'র নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের সঙ্গেও হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার মধ্যরাতেই গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান।
গণমাধ্যমে সিটি মেয়র বলেন, ‘ঘটনার অবশ্যই জোরালো তদন্ত চাইব এবং অবশ্যই আমরা আইনের আশ্রয় নেব। মেয়র হিসেবে এভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। আমি মেয়র হিসেবে তাহলে ব্যর্থ। প্রধানমন্ত্রী আমাকে শপথ পড়িয়েছেন, আমার বাবা আছেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, আমি আমার রেজিগনেশন লেটার দিয়ে দেব।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে গুলি করার অর্ডার (ডেসপাসের অর্ডার) দেওয়া হয়নি, তবে আমার বাসার সামনে যখন আমাকে ঘিরে ধরা হবে তখন আনসার সদস্যরা তো আমাকে সেভ করার চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক।’