সকাল ৯টায় কমলাপুর স্টেশনে এসেছেন মহিলা কাবাডি খেলোয়াড় শারমিন আক্তার। গন্তব্য সিলেট। স্টেশনে এসে জানতে পারেন জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন না করে ট্রেনের টিকিট নেওয়া যাবে না। নতুন এই নিয়ম আর ভোটার আইডি না থাকার কারণে নিবন্ধন প্রক্রিয়া তাঁর কাছে কঠিন কাজে পরিণত হয়েছে।
ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরে অন্য আরেকজনের ভোটার আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে গেলেও পারছেন না তিনি।
এমনি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে অনেকের।
আজ (১ মার্চ) থেকে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তাঁর’— এই নীতি নিয়ে শুরু হয়েছে ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইন ও কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহের পদ্ধতি। সকাল ৯টায় এই পদ্ধতির উদ্বোধন করেছেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।
এই পদ্ধতির জন্য যাত্রীসাধারণ ও রেলওয়ে প্রস্তুত কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেবল শুরু করেছি। ধীরে ধীরে সবকিছুই বাস্তবায়ন হবে। যাত্রীসাধারণও অভ্যস্ত হবে।’
কমলাপুর স্টেশনে একটি মাত্র নিবন্ধন বুথ। এতে কি যাত্রীদের পুরোপুরি সহায়তা সম্ভব? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখে এসেছি একটি মাত্র নিবন্ধন সহায়তা বুথ। এটা বাড়ানো হবে।’
স্টেশন চত্বরে কথা হয় আশিকুর রহমানের সঙ্গে। ঢাকায় ভর্তি কোচিং করতে এসেছেন তিনি। ট্রেনে করে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কমলাপুরে এসেছিলেন, কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের আইডি কার্ড নাই, তাহলে কীভাবে যাব? বাবা-মায়ের আইডি কার্ডও সাথে নেই। তাই নিবন্ধনও হলো না, টিকিটও পেলাম না। এখন ফিরে যাচ্ছি।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের কর্মকর্তা ও নিবন্ধন বুথে দায়িত্বরত কবির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই যেসব যাত্রী অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট কাটতে পারছেন না তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দিচ্ছি। অনেকেই আছেন সিস্টেমটা এখনো জানেন না। তাই ভিড়ও করছেন। তবে সবাই সিরিয়াল অনুযায়ী এলে কাজটা দ্রুত শেষ করা যায়।’
ফিরতি বার্তা আসতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভোটার আইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ ভুল দেওয়ার কারণে ফিরতি বার্তা আসতে দেরি হয় বা আসে না। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও অন্তত ১০ মিনিট সময় তো দিতেই হবে।’