মধ্যরাতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বাসার ‘দরজা ভেঙে’ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে আজ সকালে কোর্টে চালান করা হবে বলে জানান গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ ৷
আবু হানিফ বলেন, ‘কোনো ধরনের ওয়ারেন্ট ছাড়া মধ্যরাতে এ ধরনের অভিযান আইনের পরিপন্থী। বরং এমন অভিযানের মাধ্যমে ডিবি নিজ থেকে কোনো মাদক নিয়ে এসে এসব অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে যে কাউকে ফাঁসাতে পারে। আমরা মনে করি চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন থেকে গণ অধিকার পরিষদকে দূরে রাখতেই মূলত সরকার নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমাদের কথা পরিষ্কার, এই অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত গণ অধিকার পরিষদ রাজপথে থাকবে। এতে যদি আমাদের জীবনও দিতে হয়, তবু পিছপা হব না আমরা।’
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দিবাগত রাত আড়াইটার কিছু সময় পর নুর তাঁর ফেসবুক পেজে কয়েক দফা লাইভ করেন। লাইভে দেখা যায় সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক নুরের বাসায় ঢোকার চেষ্টা করছে, পরে অভিযানের বিষয়টি জানালে নুরের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় তাঁর বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ডিবি সদস্যরা। পরিচয়ে তারা বলেন, মতিঝিল জোনের ডিবি সদস্য তারা। এ সময় ডিবি সদস্যরা সেখানে থাকা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইয়ামিনকে আটক করে নিয়ে যান।
নুর অভিযোগ করেন, এত রাতে দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন ডিবি সদস্যরা। এ সময় তারা বাসার সিসিটিভির হার্ডডিস্ক ও ক্যামেরাসহ লাইভে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে বলে জানান নুর।
সরকারবিরোধী আন্দোলন করার কারণেই তার নেতাকর্মীদের উপর সরকার দমনপীড়ন চালাচ্ছে বলে দাবি নুরের।
ফেসবুক লাইভে এসে নুর এত রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো বাসায় ঢুকতে পারেন কিনা- সে ব্যাপারে প্রশ্ন রাখেন। বলেন, ‘এখন রাত আড়াইটা বাজে। আমার ছোট বাচ্চা আছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আজ হজ থেকে ফিরেছেন। এত রাতে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কাজ আমার বাসায় থাকতে পারে বলে আমি মনে করি না। তারা কেন এখানে আসছে আমি জানি না।’
লাইভে নুর আরও বলেন, ‘ছাত্র অধিকার পরিষদ কর্তৃক আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার বাবাকে তুলে নেওয়া হয়েছে বাসা থেকে। পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানকে তুলে নিয়েছে। আরও কয়েকজন ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।’
নুরের ভাষ্য, ‘মূলত এই ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের পতন ঠেকাতে বিরোধী দলের ওপর গ্রেপ্তার-হামলা-মামলার পথ তারা বেছে নিয়েছে।’
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খানও বলেন, ‘এর আগে গতকাল ইয়ামিনকে ধরতে তার বাবাকেও তুলে নিয়ে যায় ডিবি। ইয়ামিন এখন মিন্টু রোডে ডিবি হেফাজতে আছে।’
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রাজিব আল মাসুদ জানান, ‘বিন ইয়ামিন মোল্লার বিরুদ্ধে গত ২১ জুলাই একটি ভাঙচুরের মামলা হয়েছে পল্টন থানায়। সেই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর বিন ইয়ামিনকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতা করার জন্যই তাঁর বাবাকে আনা হয়েছিল।’