শুধু মোবাইল চোরকে নয়, চোরাই মোবাইল ফোন বিক্রয়কারীদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ১৫৮টি চোরাই ফোন উদ্ধার সংক্রান্তে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, সাম্প্রতিককালে মোবাইল ফোন চুরি বা টান মেরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। পুলিশের নিকট যে ঘটনাগুলো আসে সেগুলো উদ্ধার করা হয় এবং আসামীদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর তারা জামিনে এসে পুনরায় একই কাজে লিপ্ত হয়। কারণ চোরাই মোবাইল বিক্রি করতে পেরে তারা এ কাজে উৎসাহ পায়। যারা চোরাই মোবাইল বিক্রি করবে তাদেরকেও প্রচলিত আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হবে।
চোরাই মোবাইল বিক্রির প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, চুরি হওয়া মোবাইলগুলো ৩টি হাত বদল হয়। প্রথমত যে চুরি করে সে মোবাইলভেদে ৪-৮ হাজার টাকায় টেকনিশিয়ান বা কোন চোরাইফোন ক্রেতার নিকট বিক্রি করে দেয়। টেকনিশিয়ান বা চোরাই ফোন ক্রেতা ফোনের পার্সওয়ার্ড বা ফাইন্ড ইউর ফোন এ অপশনটি চালু থাকলে তার ডিসপ্লে ও কেসিং উচ্চমূল্যে বিক্রি করে আর এসব অপশন চালু না থাকলে আইএমইআই পরিবর্তন করে আইফোনের ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ও অন্য ফোনগুলো ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
অল্প পয়সায় দামী ফোন ক্রয়-বিক্রয়ের কথা উল্লেখ করে গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা মোবাইল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পুরাতন মোবাইল বিক্রির ক্ষেত্রে কোন আপত্তি নেই কিন্তু ব্যবসায়ীদের নিকট চোরাই মোবাইল থাকলে তাকে গ্রেফতার করা হবে। যারা বিক্রি করে তারাও অপরাধী। বিক্রেতাদের এসব কাজ থেকে সরে আসার অনুরোধ করেন তিনি।
মোবাইল ফোন চুরি প্রতিরোধে জনসাধারণকে রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্ক থেকে চলাচল করতে অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়া রিকশা বা পাবলিক পরিবহনে চলাচলের সময় কথা বলার প্রয়োজন হলে গাড়ির ভিতরের দিকে মোবাইল রেখে কথা বলার পরামর্শ দেন ডিবি এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল উত্তরা ১০ নং সেক্টরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দুপুরে ওযু করার সময় এক ব্যক্তির প্রায় দুইলক্ষাধিক টাকার একটি আইফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় ১৬ মে তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা রুজু হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়া তদন্ত করে রাজধানীর মোতালেব প্লাজা থেকে চুরি হওয়া মোবাইলটিসহ আরো ১৫৭ টি চোরাই মোবাইল, ১টি ল্যাপটপ ও ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা উদ্ধার করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলম, বিপিএম এর নেতৃত্বে একাধিক টিম। এ ঘটনায় চোর ও বিক্রয়কারীসহ আটজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।