ভেঙে গেল সাতদলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা এই জোট থেকে থেকে বেরিয়ে গেছে গণঅধিকার পরিষদ। দলটি গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে আর কোনো কর্মসূচি পালন করবে না। তবে বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে থাকবে গণঅধিকার পরিষদ। আন্দোলনের কর্মসূচিতে দলটি অন্যান্য দলের সাথেও সমন্বয় করে জোটের বাইরে থেকে এককভাবে পালন করবে গৃহীত কর্মসূচি।
শনিবার গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের মাসিক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক (নুর) সভাপতিত্ব করেন।
ওই সভা থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করা হবে। এখন থেকে শুধু ‘গণতন্ত্র মঞ্চের’ সাথে জোটবদ্ধ কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না গণঅধিকার পরিষদ। নিজস্ব উদ্যোগে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে সব দলের সাথে রাজপথে সমন্বিত কর্মসূচি পালন করবে গণঅধিকার পরিষদ।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান সাংবাদিকদের বলেছেন, গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের টানাপোড়েন চলছিল। এখন থেকে শুধু গণতন্ত্র মঞ্চের সাথেই না থেকে যুগপৎ আন্দোলনের সবার সাথে সমন্বয় করে কর্মসূচি পালন করবে গণ অধিকার পরিষদ।
২০২২ সালের ৮ আগস্ট মাসে সাতটি দল ও সংগঠন নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ গঠিত হয়। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এসব কর্মসূচি ও নেতৃত্বের বিরোধে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের মনোমালিন্য নিয়ে আলোচনা হয়। জোটে ভাঙনের শংকাও ছিল। গণঅধিকার পরিষদের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে সে শঙ্কা সত্যি হলো।
জোটের শরিক রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, অনেক দিন ধরে গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে গণঅধিকার পরিষদের টানাপোড়েন চলছিল। কোনো সংগঠন যদি মনে করে তারা মঞ্চে থাকবে না, সে অধিকার তাদের রয়েছে। তবে সরকার বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনে বিভক্তির যে চেষ্টা চালাচ্ছে, গণঅধিকার পরিষদের সিদ্ধান্ত সেটাকে সহায়তা করবে। গণঅধিকার পরিষদের এ সিদ্ধান্ত মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। এতে সরকারবিরোধী আন্দোলনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ সময়ে সরকারবিরোধীদের দৃঢ় ঐক্য দরকার ছিল। গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে গণ অধিকার পরিষদের বেরিয়ে যাওয়া দুঃখজনক।
প্রসঙ্গত, সাতদলীয় জোট গণঅধিকার পরিষদ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চে রয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এরমধ্যে জেএসডি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত দল।