কক্সবাজারে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় তৃতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে শুরু হওয়া এই সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত চলবে।
সাক্ষ্যগ্রহণ ঘিরে সকাল পৌনে ১০টার দিকে ওসি প্রদীপসহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার ১৫ আসামিকে ফের আদালতে হাজির করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১ থেকে ১৫ নম্বর সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। এ পর্যন্ত ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও্ জেরা সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম গণমাধ্যমে জানিয়েছেন আজ (সোমবার) ৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণে ষষ্ঠ সাক্ষীর জেরা শেষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল তৃতীয় দফায় সাক্ষগ্রহণের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অসহযোগিতায় সব সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, ‘ তারা সাক্ষীকে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে সময় নষ্ট করছেন। ১৫ আসামির ১৫ জন আইনজীবী আলাদাভাবে আধাঘণ্টা করে জেরার সময় নিলে সাড়ে সাতঘণ্টা সময় লাগে। জবানবন্দি নিতেও সময় লাগে ঘণ্টা দেড়েক। এতে আদালতের কর্মঘণ্টা ৯ ঘণ্টা এবং মধ্যাহ্ন বিরতিসহ দাঁড়ায় ১০ ঘণ্টায়। জবানবন্দি ও জেরা শেষ হওয়ায় তৃতীয় দফায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণে আদালতকে সহযোগিতা করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
সিনহা খুনের ঘটনায় ৪টি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর পরই পুলিশ বাদী হয়ে ৩টি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায় ও একটি রামু থানায়। অন্যিদিকে, খুনের ৫ দিন পর কক্সবাজার আদালতে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। পরে ৪টি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আসামিদের মধ্যে পুলিশের ৯ সদস্য
বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।
অপর আসামিরা হলেন
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। আসামিদের ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওসি প্রদীপ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।