সম্প্রতি রেকর্ড সংখ্যক কর্মী বিদেশে গেলেও গত সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৪১ মাসের সর্বনিম্ন এক দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
প্রবাসীদের পাঠানো প্রতি ডলারের বিপরীতে ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন। প্রতি ডলারের দাম ১১০ টাকা; এর সাথে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫ টাকা ৫০ পয়সা যোগ করে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা করে পাবেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রয়োজনীয় গতি আনতে ও ডলার সংকট মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোর প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। সরকারের বিদ্যমান নগদ সহায়তা ছাড়াও ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত প্রণোদনা হিসেবে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) গত শুক্রবার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আজ রবিবার থেকে নতুন এই প্রণোদনা কার্যকর হবে।বর্তমানে আন্তঃব্যাংক এক্সচেঞ্জ মার্কেটে ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করতে সরকার ২০১৯ সালে দুই শতাংশ প্রণোদনা চালু করে এবং পরে তা বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়। এখন ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব কোষাগার থেকে অতিরিক্ত আড়াই শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা দেবে।
এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হুসাইন এক প্রতিবেদনে বলেন, `রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।`
রেমিট্যান্স বাংলাদেশের জন্য ডলারের সবচেয়ে সহজ উৎস ও অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। তবে সম্প্রতি রেকর্ড সংখ্যক কর্মী বিদেশে গেলেও গত সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৪১ মাসের সর্বনিম্ন এক দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
গত বছর ১১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কাজের জন্য দেশ ছাড়েন। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ১৭ হাজার।
রেমিট্যান্স ছাড়া ডলারের ক্রয় মূল্য ১১০ টাকা ও বিক্রয় মূল্য ১১০ টাকা ৫০ পয়সা অপরিবর্তিত আছে।গত বছরের জানুয়ারিতে ডলারের আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা।
রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বিল বেশি হওয়ায় দেশের রিজার্ভ কমে গেছে। ফলে গত দেড় বছর ধরে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েই চলেছে।
বর্তমানে প্রবাসীদের আয়ে ব্যাংকে এক মার্কিন ডলারের দাম ১১০ টাকা পয়সা। এর ওপর সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়। এখন এক ডলারে সব মিলে পাচ্ছে ১২ টাকা ৭৫ পয়সা।
এবিবি ও বাফেদার নতুন সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন এর সাথে ব্যাংকগুলো আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তি দাম দেবে।
ফলে রেমিট্যান্সের এক ডলারে মিলবে ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা। তবে আমদানিকারকদের কাছে ডলার ১১০ টাকাতেই বিক্রি করতে হবে।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই রেমিট্যান্স হাউসগুলো থেকে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আশা করা যাচ্ছে, নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হবে। হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমবে।