দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর থেকে গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েক ধাপে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়ে সবশেষ আগামী মে মাসের শেষ দিকে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। সে হিসেবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ঈদুল ফিতরের পর থেকে সব শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।
তবে করোনা মহামারীতে বিশেষ বিবেচনায় গত ১২ জুলাই থেকে কওমি মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম এতাদিন চালু থাকলে এবার সেসব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় মাদরাসাগুলোও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৯ মার্চ) দেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮টি নির্দেশনা জারি করা হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
পরে সচিবালয়ে ১৮ দফা নির্দেশনার বিষয়ে কথা বলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধ থাকবে। সেখানে কোনো শিক্ষার্থী আসবে না। শুধু কওমি মাদরাসাই নয়, সব ধরনের মাদরাসা বন্ধ থাকবে।’
এর আগে গত বছরের ১৭ আগস্ট কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু ও পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছিল কওমি মাদরাসাগুলো।
জানা যায়, করোনার সংক্রমণের মধ্যেই গত ১২ জুলাই থেকে কওমি মাদরাসাগুলোর হিফজ বিভাগ খুলে দেওয়ার অনুমতি দেয় সরকার। গত ৮ জুলাই এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এরও আগে গত ১ জুন থেকে দেশের কওমি মাদরাসায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অফিস খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এরপর গত বছরের ২৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ কওমি মাদরাসার কিতাব বিভাগ খোলার অনুমতি দেয়। এ সময় ছয়টি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনাগুলো হলো প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও মাথায় নিরাপত্তা টুপি পরিধান করা আবশ্যক; মাদরাসায় প্রবেশের আগে প্রবেশদ্বারে স্যানিটাইজ করতে হবে; শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কক্ষে অবস্থান করবে, বিক্ষিপ্তভাবে এদিক-সেদিক চলাফেরা করা যাবে না; একজন শিক্ষার্থী থেকে অন্য শিক্ষার্থী কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্বে অবস্থান করবে; কোভিড-১৯-এর কারণে কোলাকুলি ও মুসাফাহ করা যাবে না এবং শিক্ষক ও কর্মচারীরাও একইভাবে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ক্লাস নেবেন।