মে ২১, ২০২২, ০৯:৪১ পিএম
তদন্তে শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও র্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৩ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) মো. আল-আমিন, গণিত বিভাগের মো. সোহেল রানা এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. বারিউল হক মুবিন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী।
শনিবার দুপুরে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে রিজেন্ট বোর্ডের ৭৮তম বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রিজেন্ট বোর্ডে উত্থাপিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩২০ নম্বর কক্ষ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আলমকে ডেকে নিয়ে গণিত বিভাগের সোহেল রানা, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বারিউল হক মুবিন এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের আল-আমিন শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতনে সাব্বির আলম জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
ওই কক্ষের আরও ১০-১৫ ছাত্র তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল বলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে। সাব্বির জ্ঞান হারানোর পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় এবং হাসপাতালে না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সযোগে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে সাব্বিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। পরদিন সকালে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই তাকে হলে নিয়ে আসা হয় এবং প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। সাব্বিরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হুমকি প্রদান এবং আলামত লুকানোর চেষ্টার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট বোর্ডে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিভিন্ন বিভাগের আরও ১০ জন শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে র্যাগিংয়ের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে না উল্লেখ করে অভিভাবকের সম্মতিসহ ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিতে হবে মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুচলেকা না দিলে ওই শিক্ষার্থীদেরও এক বছরের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত রিজেন্ট বোর্ডের সভায় গৃহীত হয়।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায় সভাপতিত্ব করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।