ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে পিএইচডি থিসিসে গবেষণা চুরির (চৌর্যবৃত্তি) অভিযোগ উঠেছিল। এ বিষয়ে তদন্ত প্রায় শেষের পথে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এই অভিযোগের বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য ড. এস এম মাকসুদ কামালের সাথে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, অভিযোগটির তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। খুব শীঘ্রই কমিটির সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে পেশ করা হবে।
অন্যদিকে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির বিষয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও বিষয়টি নিয়ে অসংখ্যবার সরাসরি, ফোন কল, হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদককে এড়িয়ে যান ড. রেবেকা সুলতানা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে গবেষণা প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তোলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের জার্নাল অব সোশিওলজির (সমাজবিজ্ঞান পত্রিকা) একাদশতম ভলিউমের ২য় সংখ্যায় (২০২০ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে প্রকাশিত) রাষ্ট্রদর্শনে গণতন্ত্রের অবস্থান এবং বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন অধ্যাপক রেবেকা সুলতানা।
অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ তৎকালীন উপাচার্য ও নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে এক চিঠিতে চুরির বিষয়টি তদন্ত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
উক্ত চিঠিতে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ উল্লেখ করেন, তাঁর জানা মতে উল্লিখিত প্রবন্ধে কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ রেবেকা সুলতানা চুরি করেছেন। এর মধ্যে আকবর আলী খান রচিত ‘অবাক বাংলাদেশ: বিচিত্র ছলনা জালে রাজনীতি’ (প্রথমা ২০১৭) বইয়ের ১৪২, ১৫৫-১৬০ পৃষ্ঠা থেকে; বদরুল আলম খান রচিত (প্রথমা ২০১৭) ‘গণতন্ত্রের বিশ্বরূপ ও বাংলাদেশ’ বইয়ের ১১৫ পৃষ্ঠা; বদিউল আলম মজুমদারের (আগামী প্রকাশনী ২০১৫) ‘রাজনীতি, দুর্নীতি ও নির্বাচন’ বইয়ের ৪৬ পৃষ্ঠা; আবুল কাসেম ফজলুল হকের লেখা ‘অবক্ষয় ও উত্তরণ’ কথা (প্রকাশ ২০০৯) বইয়ের ৫৪ ও ৬৩ পৃষ্ঠা থেকে চুরি করেছেন।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে চুরির সত্যতা পায। যাওয়ায় সিন্ডিকেট থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর বিষয়টির অধিকতর তদন্তের জন্য গতবছরের ৩০ মে সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামালকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন।