কোটা আন্দোলন ২০২৪

দেশের সব ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক-রেল অবরোধের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ৬, ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম

দেশের সব ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক-রেল অবরোধের ঘোষণা

দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে শনিবার (৬ জুলাই) অবরোধ তুলে নিয়েছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে অবরোধ প্রত্যাহারের আগে আগামীকাল রোববার (৭ জুলাই) বেলা তিনটা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিসহ মোট ৪ দফা দাবিতে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

কোটা আন্দোলন ২০২৪: চার দফা দাবি

  • ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা-ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
  • ‘১৮’র পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
  • সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শুন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
  • দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “কাল বেলা তিনটা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হল। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, শাহবাগ ও ঢাকা শহরের সায়েন্স ল্যাব, চানখাঁরপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিলসহ প্রতিটি পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে এসে কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।”

নাহিদ আরও বলেন, “শিক্ষার্থী ও আদালতকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে সরকার দায়িত্বহীন আচরণ করছে। নির্বাহী বিভাগ তার দায় এড়াতে পারে না। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কোটা থাকবে না। তাহলে কোটা কেন আবার ফিরে এল? কেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন করা হচ্ছে? দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আমরা হরতালের মতো কর্মসূচি পালন করব। এটা শুধু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয় বরং শিক্ষক-অভিভাবকদেরও আন্দোলনে নেমে আসতে হবে।”

শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না উল্লেখ করে আন্দোলনের সমন্বয়ক আরও বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার অবিলম্বে খুলে দিতে হবে, নয়তো আমরা নিজ দায়িত্বে সেটি খুলে নিতে বাধ্য হব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাধা দিচ্ছে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা। আমরা কিন্তু হলের তালা ভাঙতে জানি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাই।”

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কাল বেলা তিনটা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, ঢাকা শহরের সায়েন্স ল্যাব, চানখাঁরপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিলসহ প্রতিটি পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।

এর আগে, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহালসহ চার দফার দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার বেলা আড়াইটা থেকে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা নিজস্ব হলের ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে হলপাড়া-ভিসি চত্বর-টিএসসি- বুয়েট, ইডেন কলেজ হয়ে বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

Link copied!