আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। পরীক্ষা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।’
ডা. দীপু মনি বলেন, এবার এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৮ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫২ জন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৬৩ হাজার ১১৩ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৪ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষা দেবেন ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৩৮ জন এবং ছাত্রী ৫১ হাজার ৪০৬ জন।
এইচএসসি (বিএম/ ভোকেশনাল) পরীক্ষা দেবেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৯ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪ হাজার ৮২৭ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৪২ জন।
এর আগে, এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যে বিকেলে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদ অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে যেসব জানানো হয়
মহামারির কারণে এবার যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগ অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ ও সিকিউ অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না।
সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ও এমআর শিট বিতরণ, সকাল ১০টায় বহুনির্বচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ। বেলা ২টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে ১টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর শিট বিতরণ। বেলা ২টায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ। আর বেলা ২টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনী (ওএমআর শিট) উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ। এছাড়াও পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করবে।
পরীক্ষার্থীদের করণীয়
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সরবরাহকৃত উত্তরপত্রে পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই মার্জিনের মধ্যে লেখা কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ব্যবহারিক বিষয়ে তত্ত্বীয়, বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক খাতার (নোটবুক) অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে। প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ পরীক্ষার্থীর ব্যবহারিক খাতার নম্বর প্রদান করে নম্বরগুলো ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক খাতার নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠাবে।
প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্রে উল্লেখ করা বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এর আগে, গতকাল (১৭ নভেম্বর) এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়। আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যেমে জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্য রিপোর্টকে তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেশের সব জেলার সরকারি ট্রেজারিতে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।
পরীক্ষার প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, এসএসসিতে যেভাবে সৃজনশীল প্রশ্ন এবং এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয় এইচএসসির ক্ষেত্রেও একই থাকবে।