ঢাবির শতবর্ষে গবেষণাধর্মী নাট্য উপস্থাপন করবে নাট্যকলা বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ৩, ২০২১, ১২:০৭ এএম

ঢাবির শতবর্ষে গবেষণাধর্মী নাট্য উপস্থাপন করবে নাট্যকলা বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ মঞ্চে নিয়ে আসছে ইতিহাস পাঠ ও মানবতার মুক্তি বিষয়ক গবেষনাধর্মী বিশেষ নাট্য পরিবেশনা। এই পরিবেশনাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের ৩য় দিন (৩রা ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে। 

পলাশীর প্রান্তর থেকে সর্বশেষ আন্দোলন থাকবে

“উদয়ের পথে এই আলোকতীর্থে"- শীর্ষক গবেষনাধর্মী বিশেষ নাট্য পরিবেশনাটিতে ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরের ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে শুরু করে উঠে এসেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম, বৃটিশ বিরোধী আন্দলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, সামরিক শাষন, স্বৈরাচারী শাষন, যুদ্ধাপরাধীর বিচারসহ নানান যৌক্তিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় অবদান। 

৫৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে

বিভাগের শিক্ষক নাভেদ রহমনের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় বিভাগের স্নাতকোত্তর এবং স্নাতক অষ্টম, ষষ্ঠ, চতুর্থ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারে অধ্যায়নরত ৫৬ জন শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহনে এই গবেষণাধর্মী নাট্য পরিবেশনাটি নির্মিত হয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান, গণসংগীত, মুক্তিরগান সহ আরও ৩ টি মৌলিক গানের ব্যাবহার করে পরিবেশনাটিন গল্পের কাঠামো তৈরী করা হয়েছে। একই সাথে পরিবেশনারটির অন্তর্গত চিন্তা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে নাকাড়া, ঢোল, খোল, কংগো, বাঁশি, মন্দিরা, গং, কাহন ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। 

৩ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে

এই পরিবেশনাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের ৩য় দিন (৩রা ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে। বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়নের মূল ভাবনা ও সমন্বয়ে বিভাগের স্নাতকোত্তর বর্ষে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের গবেষনায় "উদয়ের পথে এই আলোকতীর্থে" পরিবেশনাটির পাণ্ডুলিপি নির্মাণ ও সূচনা সংগীত রচনা করেছেন শংকর কুমার বিশ্বাস। পরিবেশনাটির সমাপনী সংগীতসহ দুটি মৌলিক গান রচনা করেছে বিভাগের শিক্ষক শাহমান মৈশান। 

পরিবেশনাটিতে সুর, সংগীত ও পোশাক পরিকল্পনা করেছে কাজী তামান্না হক সিগমা, চলন, দেহ বিন্যাস ও কোরিওগ্রাফি করেছে অমিত চৌধুরী, মহড়া ও আবহ সংগীত তত্ত্বাবধান করেছে মনোহর চন্দ্র দাস। পাশাপাশি, মহড়াটিতে সার্বিক তত্ত্বাবধান ও অনুপ্রেরকের ভূমিকা পালন করেছে তানভীর নাহিদ খান। 

নাট্য পরিবেশনাটির নির্দেশক নাভেদ রহমান বলেন, “ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে উজ্জীবিত হয়ে পঞ্চাশ বছর আগে বাংলাদেশ নামক যে রাষ্ট্রটির জন্ম হয়, তার পেছনে চেতনার স্ফুরণ হিসেবে দৃপ্ত ভূমিকা পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক - বাংলাদেশের যেকোন উত্তাল সময়ে বাধঁ হিসেবে দাঁড়িয়েছে দেশের এই প্রবীন প্রতিষ্ঠান। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ,  স্বৈরশাসকের পতন, যুদ্ধাপরাধীর বিচারসহ প্রতিটি সংকটেই দৃপ্ত ভূমিকা রেখেছে ১৯২১ সালে জন্ম নেয়া এই প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ এবং বাংলাদেশের অর্ধশতবর্ষ একই বৃন্তে মিলিত। আর এই মিলনকে শ্রদ্ধা জানাতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।“

নাট্য পরিবেশনাটির প্রধান সমন্বয়ক ও বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়ন বলেন, “সাংস্কৃতিক মুক্তির উপরেই নির্ভর করে একটি দেশের আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন। এই মুক্তির সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিরকাল অটুট। তারই ধারাবাহিকতায় থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ শুধুমাত্র আনন্দ ও শিল্পরস আস্বাদনের জন্য নয় বরং এই জাতির ইতিহাস, রাজনীতি, উন্নয়ন ও মুক্তির কথা আমলে রেখে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর এরই একটি ধারাবাহিক রূপ হলো এই বিশেষ নাট্য পরিবেশনা।“

Link copied!