বদরুন্নেসায় এক ছাত্রলীগ নেত্রীর রুম আরেক নেত্রীর দখলের চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৫, ২০২৩, ০৭:২৩ এএম

বদরুন্নেসায় এক ছাত্রলীগ নেত্রীর রুম আরেক নেত্রীর দখলের চেষ্টা!

বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে এক ছাত্রলীগ নেত্রীর রুম আরেক ছাত্রলীগ নেত্রীর দখলে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে রুম দখলের ওই চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কলেজটির এক ছাত্রলীগের নেত্রী লাইজু আক্তার। তাঁর অভিযোগ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুনের বিরুদ্ধে। 

লাইজু আক্তারের দাবি, শনিবার দুপুরে ঘটনার সূত্রপাত। আবাসিক হলের ২০০৭ নং কক্ষে থাকেন তিনি। তাঁর কক্ষে আরও কয়েকজন মেয়ে রয়েছেন। তাদেরকে কক্ষ থেকে সরিয়ে সেখানে অন্য মেয়েদের রাখতে চান কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুন। 

রাত সাড়ে ১১টায় মুঠোফোনে লাইজু আক্তার বলেন, আমার রুম দখল করার চেষ্টা চলছে। আমার রুমে তার (সাইমুন) মেয়েরা এখনো আছে। আমার রুমটা পুরো তছনছ করে ফেলছে। আমি ভিডিও করার সময় আমাকে ধাক্কাধাক্কি করে। মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নিতে চায়, কিন্তু নিতে পারেনি।

এ বিষয়ক কিছু ভিডিও চিত্র দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের হাতে এসে পৌঁছেছে। ভিডিওগুলো ধারণ করেছেন লাইজু আক্তার নিজেই। ওই ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন ছাত্রী ২০০৭ নং কক্ষে আসেন। এ সময় তাদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'আপুর উপর তো কিছু বলা যাবে না।' 

তাদের কথার জবাবে লাইজু বলেন, 'আপুর উপর কেন বলা যাবে না সোনা? আপু যদি শৃঙ্খলা মত আমাদের দেখা শোনা করে, তাহলে আমরা সেটা অবশ্যই মেনে নিব। সে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এসব র‍্যাগিং দেয়, মেন্টাল টর্চার করে, সেটার প্রতিবাদ কেন করতে পারবা না?'

যে শিক্ষার্থীরা কক্ষের সামনে ছিল, তাদের একজন তখন বলেন, 'আপু তো কোনো জোর করে নাই। বেড চেঞ্জ করে দিছে।'

এ সময় লাইজু বলেন, 'আমাদের রুম থেকে তো কেউ যাই নাই সোনা।'

কক্ষের সামনের এক ছাত্রী বলেন, 'তাহলে আমরা আপুকে জানাই।'

লাইজু তখন বলেন, 'আমি কি করে বলব? তোমাদের ডিসিশন কি আমি দিয়ে দিব? আমি আনছি তোমাদের?'

অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, ২০০৭ নং কক্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রবেশ করে বিভিন্ন জিনিসপত্র নাড়াচাড়া করছেন। এ সময় লাইজু আক্তার ও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। 

কক্ষে আসা মেয়েরা লাইজুকে ভিডিও ধারণেও বাধা দেয়। তাঁরা লাইজু আক্তারের ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁরা ফোন নিতে না পেরে কক্ষ ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুন বলেন, আমি কেন নির্যাতন করব? নির্যাতনের কোন চিহ্ন দেখেছেন ওর মধ্যে? আপনারা চাইলে ওর কোনো মালামাল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিনা, ওর রুমে কোন ভাঙচুর হয়েছে কিনা আপনারা চাইলে দেখতে পারেন। আমি আসলে ভাই এগুলো কিছুই জানি না। 

সাইমুন দাবি করেন, হল প্রশাসন থেকে কয়েকজনের সিট পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'প্রশাসন থেকে বলছে ওদেরকে চেঞ্জ হওয়ার কথা। আমি এগুলো কোন কিছুর সাথে ইনভলভ না। শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানো হচ্ছে। আমি যতটুকু জানি ওকে (লাইজু আক্তার) বাদে বাকি কয়জনকে চেঞ্জ করার কথা বলা হয়েছে।'

সাইমুন বলেন, 'ও (লাইজু) পুরো বিষয়টাকে জল ঘোলা যেটা করে সেটা করছে। আমি কোনোভাবেই এর সাথে জড়িত না। আমি কেন ওদেরকে চেঞ্জ করব?' 

আপনি যেহেতু এ বিষয়ে জানেন না, তাহলে আপনার নাম কেন আসছে? দু'জনই ছাত্রলীগ করেন, আপনাদের মধ্যে কোনো শত্রুতা আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে সাইমুন বলেন, 'আমার নামটা কেন, কী হিসাবে আসছে জানি না। এটা আপনাদের (সাংবাদিকদের) বের করতে হবে। আমার নাম কেন আসছে আমি কীভাবে জানব? ওর সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই। ও আমার হলের ছোট বোন। ওর সাথে আমার কেন শত্রুতা থাকবে? আমি বিষয়ে কিছু জানি না। আমি এর সাথে কোনোভাবেই জড়িত না।'

Link copied!