শুয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতার পা টিপে দেওয়ার ছবি ভাইরাল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২১, ২০২৩, ০২:৪৬ পিএম

শুয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতার পা টিপে দেওয়ার ছবি ভাইরাল

শুয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতার পা টিপছেন দুই জুনিয়র নেতা, এমন একটি ছবি গতকাল থেকে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ওই ছবিতে দেখা গেছে, বিছানায় শুয়ে আছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক। দুই পাশে বসে তাঁর পা টিপে দিচ্ছেন সংগঠনটির অপর দুই নেতা। এমন একটি ছবি সোমবার বিকেলে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের অনেকেই সমালোচনা করছেন। তবে রেজাউল হকের দাবি, তিনি অসুস্থ থাকায় ওই দুই নেতা তাঁকে সেবা করেছিলেন।

এই ছবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতা কথা বলেছেন। তারা জানিয়েচেন, ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষ থেকে তোলা। তিন আসনের এ কক্ষ দখল করে একাই থাকেন রেজাউল হক। যদিও তাঁর ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে প্রায় এক দশক আগে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যমতে, রেজাউল হক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন প্রায় ১৭ বছর আগে, ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে। তিনি স্নাতক পাস করেন ২০১০ সালে। স্নাতকোত্তর পাস করেছেন ২০১৩ সালে।

রেজাউল হক ছাত্রলীগ সভাপতির দায়িত্ব পান ২০১৯ সালে ১৪ জুলাই। সভাপতির মেয়াদ এক বছর হলেও তিনি এখনো এই পদে রয়ে গেছেন। তাঁর শিক্ষাবর্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা অন্তত ৯ বছর আগে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির দুই সদস্যও তাঁর চেয়ে বয়সে ছোট।

রেজাউলের শিক্ষাবর্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা অন্তত ৯ বছর আগে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির দুই সদস্যও তাঁর চেয়ে বয়সে ছোট।

পা টেপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল হক দাবি করেছেন, ছবিটি করোনা মহামারির সময়ের। তখন ইউরিক অ্যাসিডের কারণে তাঁর পা ফুলে গিয়েছিল। এ সময় জুনিয়ররা তাঁকে সেবা করেছিলেন। 

করোনাকালে ক্যাম্পাস ও আবাসিক হল বন্ধ ছিল। সে অবস্থায় বন্ধ হলে কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছিল— এমন প্রশ্নে রেজাউল দাবি করেন, তাহলে ছবিটি বছরখানেক আগের। তিনি সঠিক তারিখ মনে করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি। তিনি জানান, রেজাউল হক তাঁর চেয়েও বয়সে বড়। ছাত্রলীগের রাজনীতি নিয়মিত ছাত্র দিয়ে পরিচালনা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছবিতে ছাত্রলীগের যে দুই নেতাকে পা টিপতে দেখা গেছে, তাঁদের একজন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ। আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ছবিটি প্রায় দেড় বছর আগের। তখন রেজাউল হক অসুস্থ ছিলেন। তাই তাঁরা সেবা করেছিলাম।

ছবিতে থাকা অপরজন উল্টো দিকে ফিরে থাকায় তাঁর চেহারা দেখা যায়নি। তবে তিনি ছাত্রলীগের উপক্রীড়া সম্পাদক শফিউল ইসলাম বলে নিশ্চিত করেছেন আজাদ। এ বিষয়ে কথা বলতে তার ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও শফিউল ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি বলেন, রেজাউল হকের সভাপতি পদে থাকার কোনো যোগ্যতা নেই৷ তাঁর ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে অন্তত ১০ বছর আগে। অতীতেও তিনি নারীসংক্রান্ত বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। চাঁদাবাজি নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফজলে রাব্বি বলেন, রেজাউল হক তাঁর চেয়েও বয়সে বড়। ছাত্রলীগের রাজনীতি নিয়মিত ছাত্র দিয়ে পরিচালনা করা উচিত।

Link copied!