স্কুল বন্ধ: সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ১১:০০ পিএম

স্কুল বন্ধ: সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী নাফিয়া আনজাত জানান, তার স্কুলে এবার অ্যাসাইনমেন্ট দিচ্ছে না। শিক্ষকরা বলেছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হলে তারা অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু করবে।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বেড়ে গেছে। এই বিবেচনায় ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ঘোষণা করেছে ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

নাফিয়া এই প্রতিবেদককে জানান, তাদের স্কুলে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে ক্লাস শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। “অনলাইনে পড়াশোনার প্রতি আমাদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। কারণ অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বেশি কিছু শেখে না,” তিনি বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বক্তব্য অনুযায়ী, ৬ ফেব্রুয়ারির পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার। তিনি বলেন, “কোভিড-১৯-এর জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও কয়েকদিন বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে।

এই অবস্থায় সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। অভিভাবকরা মনে করেন শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না এবং স্কুল খোলা উচিত।

নুরুন্নাহারের সন্তান খিলগাঁওয়ের ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে পড়ে। তিনি বলেন, “কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভালো শেখানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, কিন্তু অধিকাংশই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে তাদের দায়িত্ব অবহেলা করে চলেছেন। আমি মনে করি স্কুলগুলো জরুরি ভিত্তিতে খুলে দেওয়া উচিত।”

"এছাড়াও, ব্যক্তিগত কোনো কার্যক্রম না থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ হারাচ্ছে," তিনি যোগ করেন।

বাংলাদেশ তার প্রথম কোভিড রোগী শানাক্ত হয় ৮ মার্চ ২০২০। সংক্রমণের হার রোধ করার জন্য, সেই বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং দীর্ঘ ৫৪২ দিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, বন্ধ আরও দীর্ঘায়িত হলে অনেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সরে যেতে হবে। গণমাধ্যম রিপোর্ট অনুসারে, ২৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা থেকে ছিটকে পড়েছে এবং ১৫,০০০ স্কুল স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহনাজ লামীশা গৃহশিক্ষক হিসেবে খণ্ডকালীন কাজ করেন। তিনি বলেন, "অনলাইনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। এর ফলে তারা শেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আমার মতে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুলগুলো আবার চালু করা উচিত।"

Link copied!