ডিসেম্বর ৯, ২০২৩, ০৪:০৬ পিএম
কপ-২৮ সম্মেলনে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় চার দফা দাবি পেশ করেছে বাংলাদেশ। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত অর্থের পুরো পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের কথা উল্লেখ আছে এই দাবিগুলোতে। এছাড়াও জলবায়ু দুর্গতদের বর্তমান অবস্থা যাচাই করে সে অনুযায়ী অর্থায়নের বিষয়ে বিবেচনা করার বিষয়টিও জানানো হয়।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুবাইতে চলমান কপ-২৮ সম্মেলনে দাবি উত্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
চার দফা দাবিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্য বাঁচিয়ে রাখার ওপর জোর দাবি জানান মন্ত্রী। এছাড়াও জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন অর্থ সংগ্রহ করা এবং অন্যান্য ‘পাবলিক সোর্স’ থেকে অর্থায়ন বাড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনগুলোতে দেখা যায় যে আমরা ভুল পথে যাচ্ছি। ২০৩০ সালের মধ্যে প্যারিস চুক্তির ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্য ঠিক রাখতে নির্গমন হ্রাসের প্রতিশ্রুতির উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরও সাত গুণ বাড়াতে হবে।
‘আমাদের বেঁচে থাকার জন্য ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্যটি বাঁচিয়ে রাখতে হবে। নির্গমন ব্যবধান পূরণের জন্য আমাদের প্রধান নির্গমনকারীদের দ্বারা সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। প্রথম গ্লোবাল স্টকটেককে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্য পূরণের বিষয়ে যেসব উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে সেসব পূরণ করে আসন্ন ফলাফলের বিরুদ্ধে অগ্রগতি মূল্যায়নের মাইলফলক তৈরি করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে (এলডিসি এবং সিআইডিএস) ন্যাশনাল অ্যাডাপশন প্ল্যান বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) এবং ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশন্স বা জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য ‘পাবলিক সোর্স’ থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। আর কপ-২৬-এ ২০১৯-২০২৫ সময়ের জন্য উন্নত দেশগুলোকে যে ‘কল টু ডাবল অ্যাডাপশন ফাইন্যান্স’-এর পরিকল্পনা দেয়া হয়েছিল তার অধীনে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ করতে হবে।
শাহাব উদ্দিন আরও বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিতে হবে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত জলবায়ু অর্থায়নের জন্য যে লক্ষ্য নির্ধারিত আছে তার সাথে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী জলবায়ুদুর্গতদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যাতে সঠিকভাবে জলবায়ু অর্থায়ন হয়।
সবশেষে প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের চরম হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে একটি নিরাপদ ও উন্নত স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।