ছবি: সংগৃহীত
হবিগঞ্জের মাধবপুরে তেলমাছড়ার বিস্তীর্ণ পাহাড় অঞ্চলে বন্যপ্রাণীদের প্রচন্ড পানি সংকটে দেখা দিয়েছে। ফলে বন্যপ্রাণী বিশেষ করে বন্যশূকরসহ বানর, মায়া হরিণ ও সজারু ইত্যাদি প্রানী বিট কর্মকর্তা কার্যালয়ের সামনে রাখা পানির কৃত্রিম বেসিন পর্যন্ত চলে আসছে। তৃষ্ণার্ত হয়ে অনেক প্রাণী লোকালয়ে গিয়ে শিকারীদের কবলেও পড়ার খবরও রয়েছে।
সম্প্রতি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে একদল বন্যশূকরের বাচ্চাসহ পানি পান করার দৃশ্য। এরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হওয়ার কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে দূর থেকে সেই ভিডিও ধারণ করা হয়।
আরো দেখা যায়, অনেকটা জীবন বাঁচানোর স্বার্থে ঝুঁকি নিয়ে বন্যশূকর বাচ্চা কাচ্চাসহ পানি পান করতে আসছে।
জানা যায়, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজানপুর ইউনিয়নের তেলমাছড়ার বিটের বন জঙ্গলে বহু বন্যপ্রাণীর বসবাস। এছাড়া এই অঞ্চলটি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানেরও ঘেষা হওয়ায় সেখানে বন্যপ্রাণীদের আনাগোনা বেশি। সেজন্য সেখানে গ্রীষ্মকালে পানির চরম সংকট দেখা দেয়।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা বলছেন কি পরিমাণ তৃষ্ণার্ত হলে বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ের কাছে ব্যস্ততম রাস্তার পাশে থাকা কোন কৃত্রিম পানির বেসিনে পানি পান করতে আসে তা আমাদের বুঝতে হবে। এর ফলে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ চলাফেরা ও প্রজননে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অনতিবিলম্বে বনের ভিতরে নীরব জায়গায় একটি পুকুর খনন করা জরুরি।
হবিগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী বন্যপ্রাণী সংগঠন “পাখি প্রেমিক সোসাইটি” সেখানে বন্যপ্রাণীর জন্য পানি সরবরাহ বাড়াতে কৃত্রিম পুকুর তৈরির জন্য বারবার বন বিভাগে দাবিও জানিয়ে আসছে।
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দিয়েছে তেলমাছড়া বিটের সাদিকুর রহমান নামে এক কর্মচারী। সাদেকুর রহমান বলেন, সব সময় বিশেষ করে বন্যশূকরের দল এখানে পানি পান করতে আসে। ইতিমধ্যে এখানে বন্যপ্রাণীদের পানি সংকট সমস্যা নিরসনে আমাদের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার উদ্যোগে কৃত্রিম পুকুর সৃষ্টির তৈরি করার পরিকল্পনাও চলছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার অঞ্চলের সহকারি বন সংরক্ষণ (এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান জানান, বন্যপ্রাণীদের পানি সমস্যা নিরসনে কৃত্রিম পুকুর তৈরি করার জন্য আমাদের কাছে কেউ একজন আবেদন করেছেন। সেটি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। কোন জায়গায় সেটি স্থাপন করলে বন্যপ্রাণীর উপকার হবে সেটি নিয়ে ভাবা হচ্ছে দ্রুতই এটি হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।