এবারের ঈদ সবার কাটলো বৃষ্টিময়। ঈদের আগের দিন সকাল থেকেই দিনভর ভারী বৃষ্টি। অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামা শুরু হলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায় বৃষ্টি থামার কোনো নাম নেই। এমন টানা বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার অবস্থা কেমন হতে পারে সে সহজেই অনুমেয়। বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা যায়।
এমন ভারী বৃষ্টি টানা আরও এক সপ্তাহ চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মাঝেমধ্যে বিরতি দিলেও প্রতিদিনই রাজধানীর কোথাও না কোথাও অল্প সময়ের জন্য হলেও বৃষ্টি হতে পারে।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, বৃষ্টি বাড়তে থাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। টানা বৃষ্টি চললে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি চলে আসতে পারে। তবে এ থেকে বড় বন্যার কোনো আশঙ্কা দেখছেন না বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মৌসুমি বায়ু বেশ সক্রিয় রয়েছে। যে কারণে বৃষ্টি বেড়ে গেছে। আগামী এক সপ্তাহ তা একই রকম থাকতে পারে। ফলে বৃষ্টি আগামী এক সপ্তাহ একইভাবে ঝরতে পারে।
এদিকে বৃষ্টি ও মেঘ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। গরমের অনুভূতি কমে গিয়ে কিছুটা স্বস্তির আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। জুলাই মাসের বেশির ভাগ সময়জুড়ে এ ধরনের আবহাওয়া থাকতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা। কারণ হিসেবে মৌসুমি বায়ু শক্তি অর্জন করায় সারা দেশের ওপর সক্রিয় আছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। যে কারণে দেশের বেশির ভাগ এলাকার আকাশে মেঘ ও থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরছে। ফলে তাপমাত্রা দ্রুত কমে আসছে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, মূলত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। ওই বায়ুর সঙ্গে আসা প্রচুর জলীয় বাষ্পের কারণে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। ফলে জুলাই-আগস্ট মাসকে দেশের সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল মাস বলা হয়। এবার মৌসুমি বায়ু একটু দেরিতে, অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের এক সপ্তাহ পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে বৃষ্টি দেরিতে শুরু হয়েছে। তবে শুরু হওয়ার পর থেকে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার বৃষ্টি বেশ জোরেশোরে নেমেছে। মাসের বাকি সময়জুড়ে একই ধারায় বৃষ্টি চলতে পারে বলে মনে করেছেন আবহাওয়াবিদেরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ঝরেছে সিলেটে ৯৯ মিলিমিটার। গতকাল সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীতে ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। মেঘ ও বৃষ্টির কারণে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে ৯৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর মেঘের কারণে সূর্যের দেখা খুব বেশি পাওয়া যায়নি। ফলে দিনভর তাপমাত্রা ছিল বেশ কম, আরামদায়ক।