তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃত্যুর তালিকায় এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার নাম

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম

তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃত্যুর তালিকায় এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার নাম

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রতি ঘণ্টায় মৃত্যুর তালিকায় নাম বেড়ে যাচ্ছেই। দেশ দুটির মধ্যকার সীমান্ত এলাকায় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) হয়ে যাওয়া ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে দেখা যায়, তুরস্ক ও সিরিয়া কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে নিহতের সংখ্যা তুরস্কে ১৪ হাজার আর সিরিয়ায় ৩ হাজার ১৬২ জন।

ts8

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৭তে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর ১১ মিনিট পরই আঘাত হানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প। তুরস্ক-সিরিয়া ছাড়াও এসব ভূমিকম্প পাশের সাইপ্রাস ও লেবাননেও অনুভূত হয়।

ts3

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশে ৩ মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ঘোষণায় তিনি বলেন, ভূমিকম্প বিপর্যস্ত এলাকার অংশ হিসেবে ১০টি শহরে জরুরি অবস্থা ঘোষিত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া নিহতদের স্মরণে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

ts11

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কাহরামানমারাস প্রদেশে উদ্ধার তৎপরতা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এরদোয়ান বলেন, দুর্যোগ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে কিছু সমস্যা ছিল। এ শহরটিই ছিল দ্বিতীয় ভূমিকম্পের কেন্দ্র এবং প্রথম ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে।

ts18

বিমানবন্দর ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারকাজ বিলম্ব হয়েছে বলে জানান এরদোয়ান। তবে এখন উদ্ধারকাজ স্বাভাবিকভাবেই চলছে জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের কাছে যা কিছু আছে তার সবই আমরা কাজে লাগিয়েছি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। রাষ্ট্র তার কাজ করে যাচ্ছে।’ 

ts17

এই ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্কের হাতেই প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রদেশে ভবন ধসে মারা গেছেন ৩ হাজার ৩০০ জন। প্রদেশটিতে ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আর এত বড় দুর্যোগ সামাল দেওয়ার মতো প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব। কিন্তু তবুও সবাইকে উদ্ধার করা হবে বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছেন তিনি।

ts22

প্রেসিডেন্ট এ কথা জানালেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগ করেছেন। প্রয়োজনীয় সাহায্যের অভাবে পরিবারের নিখোঁজ সদস্যদের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে খুঁজে বের করতে পারছেন না তারা। ধীরগতিতে উদ্ধার কাজ চলছে অভিযোগ করে তারা জানান, সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে এবং এ কারণেই ভূমিকম্পে এত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

Turkey Syria 7

ভূমিকম্পের তিন দিন পর এসেও উদ্ধারকার্য সম্পূর্ণ না হওয়ায় যারা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছেন তাদের জীবিত পাওয়ার আশা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। এ বিষয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ স্টেভেন গোডবে বলেন, ‘দুর্যোগের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে ৭৪ শতাংশ। ৭২ ঘণ্টা (তিন দিন) পর এটি নেমে আসে ২২ শতাংশে। আর পঞ্চম দিনে কোনো আহত বা ক্ষতিগ্রস্তের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৬ শতাংশে চলে আসে।

ts6

এর আগে ১৯৯৯ সালে তুরস্কে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার এক ভূমিকম্পে প্রাণ হারান ১৭ হাজারের বেশি মানুষ; আহত হন ৩৩ হাজারের বেশি। এরই মধ্যে এবারের ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে।

Link copied!