ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩, ০২:০৪ পিএম
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেখানকার এক ধ্বংসস্তূপে জন্ম নেওয়া নবজাতককে দত্তক নিতে হাজার হাজার আবেদন জমা পড়েছে। ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পর সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আলেপ্পোর আফরিন জেলার জিনদায়ার্স শহরে ধ্বংসস্তূপে জন্ম নেয় শিশুটি। এরপরই শিশুটির নাম দেওয়া হয় আয়া। সদ্যোজাত আয়ার মা কিংবা পরিবারের অন্য কেউ বেঁচে নেই।
বিবিসি ও দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুটি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শিশুটির দেখাশোনা করা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হানি মারুফ জানিয়েছেন, ‘সোমবার যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন তার শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছিল। গায়ে ক্ষত ছিল, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। তবে শিশুটির অবস্থা এখন অনেকটা স্থিতিশীল।’
হাসপাতালের ম্যানেজার খালিদ আত্তিয়াহ জানান, চার মাস বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁর। আত্তিয়াহর স্ত্রী আয়াকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন বলে জানান তিনি।
শিশু আয়াকে দত্তক নিতে চেয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য ফোনকল এসেছে বলে জানিয়ে আত্তিয়াহ বলেন, ‘এখনই দত্তক দেওয়া হবে না আয়াকে। ওর কোনো আত্মীয়স্বজন না পেলে তারপর ভেবে দেখব। এখন ও আমার সন্তানের মতোই থাকবে।’
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শিশু আয়াকে দত্তক নেওয়ার জন্য হাজারো মানুষ আবেদন করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘আমি শিশুটিকে দত্তক নিতে চাই এবং তাকে একটি সুন্দর জীবন দিতে চাই।’
কুয়েতের এক টেলিভিশন উপস্থাপক লিখেছেন, ‘আমি তাকে দত্তক নেওয়া ও দেখভালের জন্য প্রস্তুত, যদি নিয়মকানুন মেনে আমাকে দেওয়া হয়।’
সিরিয়া ও তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতককে হাতে নিয়ে দৌড়ে আসছেন এক উদ্ধারকর্মী। সে সময় আরেক উদ্ধারকর্মীকে কাপড় এগিয়ে দিতে দেখা যায়।
নবজাতকটির এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় খলিল আল-সুওয়াদি জানান, আয়াকে উদ্ধারের সময় তিনি সেখানে ছিলেন এবং আফরিনের হাসপাতালে চিকিৎসক মারুফের কাছে নিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোররাতে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত এলাকা ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।