জুন ২, ২০২২, ০৭:৫১ পিএম
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রায় প্রতিদিন ৬০ থেকে ১০০ জন সেনা মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া আহত হচ্ছে প্রায় ৫০০ সেনা।
গতকাল বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউজম্যাক্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
নিউজম্যাক্সকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে একজন দোভাষীর মাধ্যমে নিউজম্যাক্সকে তিনি বলেন, “ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি খুব কঠিন। আমরা প্রতিদিন ৬০ থেকে ১০০ জন সৈন্য হারাচ্ছি। আহত হচ্ছেন প্রায় ৫০০ সৈন্য।”
পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়ান বাহিনী কামান এবং বিমান হামলার পর সেভেরোডোনেটস্ক শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের কাছাকাছি রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”
পূর্ব ইউক্রেনে আমরা প্রতিরোধ ধরে রাখার চেষ্টা করছি জানিয়ে জেলেনস্কি আরও বলেন, “তবে এ যুদ্ধে রুশ বাহিনীও যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করা নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় মস্কো-কিয়েভের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো।
তবে ওই কৌশল কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এর দুদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে।
গত এপ্রিলে সামরিক অভিযানের প্রথম পর্বে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে রাশিয়া। পাশাপাশি, মারিওপোল ও দোনবাস অঞ্চলে অভিযান তীব্র করে তোলে পুতিনের বাহিনী। ইতিমধ্যে মারিওপোল দখল করে ফেলেছে রুশ বাহিনী। এবার দনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের শেষ ঘাঁটি সেভেরদোনেৎস্ক দখলে মরিয়া পুতিন বাহিনী। লুহানস্ক অঞ্চলের সেভেরদোনেৎস্ক শহরের মেয়র আলেকজন্ডার স্টাইউক আগেই জানিয়েছিলেন, প্রায় তিন সপ্তাহের যুদ্ধে সেখানে দেড় হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রুশ বাহিনীর ধারাবাহিক গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণের ফলে শহরের ৬০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।