মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে দেশটির জান্তা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে জেনেভায় জরুরি এক অধিবেশনে এ আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে মিয়ানমারে বন্দী ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সব নেতা–কর্মী ও বিক্ষোভকারীকে মুক্তি দিতে আহ্বান জানিয়েছে কাউন্সিল।
মিয়ানমারে আজ শনিবারও বিক্ষোভ চলছে। জাতিসংঘের আহ্বানের পর দেশটিতে বিক্ষোভ দমাতে আরও বেশিসংখ্যক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হতে পারে বলে শোনা গেছে।
এএফপির খবরে জানা যায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের উপপ্রধান নাদা আল-নাশিফ গতকাল জান্তা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বিশ্ব।
মিয়ানমারে আজ জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জোরালো হয়েছে। দেশটির রাস্তায় কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। জান্তা সরকার নতুন করে আবার বিক্ষোভকারীদের আটক করতে পারে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাথেইন শহরের হাসপাতালে স্থানীয় জনপ্রিয় একজন চিকিৎসককে আটক করা হতে পারে বলে খবর শোনা যায়। এর প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভকারীরা ভিড় করেন।
থান মিন টুট নামে ওই চিকিৎসক এএফপিকে আজ জানান, তিনি মুক্ত আছেন। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে তিনি অসহযোগ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইয়াঙ্গুনে ভবনের বাইরে এসে বাসনপত্র বাজিয়ে বিক্ষোভ জানান অনেকে। ইয়াঙ্গুনের একজন স্টোরকিপার টিন জার এএফপিকে বলেন, ‘যখনই আমরা বাসনের শব্দ শুনব, তখনই বিক্ষোভে যোগ দেব। তারা গুলি করলেও আমরা ভয় পাই না।’
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস বলছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে ৩২০ জনের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে।
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। শান্তিপূর্ণ ওই বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও রাবার বুলেট ছোড়ে সরকারি বাহিনী। রাজধানী নেপিডোতে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে দুজন আহত হন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের মধ্যে ২০ বছরের এক নারী নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
মাওলামাইন শহরে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে তাঁদের তুলে দেয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে আহত হন তিনজন। সেখান থেকে নয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে বিক্ষোভের মুখে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সরকারি কর্মচারীদের কাজে ফিরতে হবে।
দুই সপ্তাহ আগে আটকের পর থেকে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।