প্রায় দুই সপ্তাহ সাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছেছে ৪০০ রোহিঙ্গা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিসেম্বর ১০, ২০২৩, ১০:৫৪ এএম

প্রায় দুই সপ্তাহ সাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছেছে ৪০০ রোহিঙ্গা

ছবি: সংগৃহীত

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আন্দামান সাগরে কাঠের নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছেছেন প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা। 

রবিবার ( ১০ ডিসেম্বর ) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছান তারা। স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয় সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, নভেম্বর থেক শুরু করে এক হাজার ২০০ রোহিঙ্গা সদস্য ইন্দোনেশিয়ায় এসেছেন। এ নিয়ে মোট আগতদের সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার ৬০০।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ করবে না বলে জানালে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ২টি নৌকা করে বাংলাদেশ থেকে এসেছে।

এই প্রদেশের জেলে সম্প্রদায়ের নেতা মিফতাহ কুট আদ রবিবার ( ১০ ডিসেম্বর ) রোহিঙ্গাদের আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকা ইন্দোনেশিয়ার তীরে এসে ভিড়ছে।

মিফতাহ জানান,“রবিবার ভোরে দুইটি নৌকা আকেহ প্রদেশের পিদিয়ে ও আকেহ বেসার জেলায় এসে পৌঁছায়,উভয় নৌকায় প্রায় ২০০ জন করে যাত্রী ছিল।”

স্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা আনদি সুসানতো জানান, ভোর চারটায় পিদিয়ে জেলায় প্রায় ১৮০ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছায়। কর্মকর্তারা তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে বলে জানান তিনি।

সুসানতো নিশ্চিত করেন, সামরিক বাহিনী অপর এক নৌকা এসে পৌঁছানোর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত, কিন্তু সেটা কতজন যাত্রী নিয়ে কোথায় এসে ভিড়েছে, সে বিষয়টি তিনি জানেন না।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, তিনি সন্দেহ করছেন, সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের আগমন বেড়ে যাওয়ার পেছনে মানবপাচারের বিষয়টি জড়িত।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে দেশটির ক্ষুদ্র, মুসলিম নৃ-গোষ্ঠী রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রোহিঙ্গা সদস্যদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেয় না এবং তাদেরকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে আসা অবাঞ্ছিত মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে।

প্রতি বছর নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মাঝে সমুদ্র শান্ত থাকা অবস্থায় নির্যাতিত রোহিঙ্গা সদস্যরা মিয়ানমার ছেড়ে কাঠের তৈরি ভগ্নদশার নৌকায় করে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া পালিয়ে যায়।

ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। কিন্তু উপকূলে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে দেশটি।

২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভিযানের পর দেশটি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। ওই অভিযানে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, হত্যা এবং হাজার হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

Link copied!