সুদানে মসজিদে ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৭৮ জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:০৮ পিএম

সুদানে মসজিদে ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৭৮ জন

সুদানের দারফুর অঞ্চলের আল-ফাশির শহরে একটি মসজিদে ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ফজরের নামাজ চলাকালে এ হামলা হয় বলে চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধার অভিযান চলছে।

নর্থ দারফুরের রাজধানী আল-ফাশিরে এই হামলার জন্য প্যারামিলিটারি র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করছে সুদানের সামরিক বাহিনী। 

তবে আরএসএফ এখনো এর দায় স্বীকার করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি। সুদানের সার্বভৌম কাউন্সিলও জানিয়েছে, হামলায় ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

সুদানে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আরএসএফ আল-ফাশিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে হামলা বাড়িয়েছে। এটি বর্তমানে দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ প্রধান ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শহরটিতে থাকা তিন লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষ দুই পক্ষের সংঘাতে আটকা পড়েছে।

হামলার পর প্রকাশিত ভিডিওতে শহরের পশ্চিমাঞ্চলের একটি মসজিদের পাশে কম্বল ও কফিনে মোড়ানো প্রায় ৩০টি মৃতদেহ দেখা গেছে। বিবিসি ফুটেজটির সত্যতা যাচাই করেছে।

গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আরএসএফ আল-ফাশির শহর অবরোধ করে রেখেছে। পুরো নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নিয়ে তারা সম্প্রতি নতুন অভিযান শুরু করেছে এবং উদ্বাস্তুদের আবু শউক ক্যাম্পেও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব জানিয়েছে, ক্যাম্পটির বেশিরভাগ অংশ এখন আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে।

উপগ্রহচিত্রে আরও ইঙ্গিত মিলেছে যে, আরএসএফ ইতিমধ্যে সুদানের সেনাবাহিনীর মিত্র ‘জয়েন্ট ফোর্সেস-এর সদরদপ্তরে প্রবেশ করেছে। এই সদরদপ্তরটি আগে জাতিসংঘের একটি কম্পাউন্ড ছিল। যদিও তারা পুরো এলাকা দখল করেছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আরএসএফের অগ্রযাত্রায় এখন আল-ফাশিরের বিমানবন্দর ও সেনাবাহিনীর বিভাগীয় সদরদপ্তর তাদের অস্ত্রের আওতায় এসেছে বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। দ্রুত সহায়তা না পেলে আল-ফাশিরের পতনের আশঙ্কাও করেছে তারা।

শহরটি দখলে নিতে পারলে সুদানের পশ্চিমাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে এবং দেশটি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে। বর্তমানে উত্তর ও পূর্বাঞ্চল সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, আল-ফাশির দখলের পর শহরের জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চালাতে পারে আরএসএফ। ইতিপূর্বে জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আরএসএফ পদ্ধতিগতভাবে অনারব সম্প্রদায়গুলোকে নিশ্চিহ্ন করার নীতি বাস্তবায়ন করছে।

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফ সেনারা আল-ফাশির থেকে অনারব সম্প্রদায়কে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছে। তবে আরএসএফ বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং বলছে, তাদের সঙ্গে কোনো জাতিগত সংঘাতের সম্পর্ক নেই।

Link copied!