অক্টোবর ২০, ২০২৩, ০১:১৮ এএম
ব্রিটেনজুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে চলা বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের হামাসের সমর্থক বলে প্রচার করেছে বিবিসি। পরে তীব্র সমালোচনার মুখে ক্ষমা চেয়েছে তারা।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা বর্ষণের প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ চলছে। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বহু দেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে রাস্তায় বিক্ষোভ করছে মানুষ।
তবে ফিলিস্তিন–ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে বরাবরের মতো এবারও পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর পক্ষপাতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর মধ্যে একটি বিক্ষোভের খবরকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের পর ক্ষমা চেয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গত সোমবার এই সংবাদ সম্প্রচারের পরই সোশ্যাল মিডিয়াতে তোপের মুখে পড়ে বিবিসি। একজন এক্স ব্যবহারকারী লেখেন, ‘সঠিক সাংবাদিকতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ আরেক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘বিবিসির এমন কাজ ভয়ংকর!
এর মানে হলো লন্ডনে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ২০০০ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘন করেছেন—এই প্রতিবেদন কে তৈরি করেছে?’ আরেকজন এমন অসম্মানজনক পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদনের জন্য বিবিসি টিভির লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
এরপর বিবিসি নিউজের প্রধান উপস্থাপক মারিয়াম মোশিরি এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বিবৃতিতে লেখেন, ‘এর আগে আমরা সপ্তাহের শেষ দিকে ফিলিস্তিনপন্থী কিছু বিক্ষোভের বিষয়ে রিপোর্ট করেছিলাম।
আমরা ব্রিটেনজুড়ে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভের বিষয়ে বলেছিলাম যে, ‘লোকেরা হামাসের পক্ষে তাদের সমর্থন জানিয়েছে।’আমরা স্বীকার করছি, এটি বাজেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
এই উপস্থাপনায় ওই বিক্ষোভের একটি বিভ্রান্তিকর বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল।’ গত মঙ্গলবার বিবিসির সরাসরি সম্প্রচারেও ক্ষমা চেয়ে এই বিবৃতি পাঠ করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ওই অঞ্চলে বহু সাংবাদিক ও প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছে। এখন গাজায় ইসরায়েলের বোমা বর্ষণ চলছে। সংঘাতের খবর সংগ্রহে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে।
অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনের সংখ্যা প্রায় চার হাজারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ১ হাজারের বেশি শিশু। সারা বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ ইসরায়েলের এই বর্বরতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে।
লন্ডনে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি হয় গত শনিবার। আর সেই বিক্ষোভের খবর প্রচার করতে গিয়েই তথ্য বিকৃত করে বিবিসি।
গাজা–ইসরায়েল সংঘাতের খবর প্রকাশে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের পক্ষপাতিত্ব আর আগের মতো নির্বিচার থাকতে পারছে না। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে তারা।
গত সপ্তাহে একটি নিবন্ধে বিবিসির একজন শীর্ষ সম্পাদক হামাসকে বর্ণনায় ‘সন্ত্রাসী’ শব্দের পরিবর্তে ‘যোদ্ধা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনের এই স্বাধীনতাকামী সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে।