সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র, ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী ও ভাষ্যকার চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
ইউটাহর অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এ ঘটনাকে বর্ণনা করেছেন ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে ইউটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ৩১ বছর বয়সী কার্ক। সে সময় দূর থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়।
গুলি কার্কের ঘাড়ে লাগে এবং তিনি মঞ্চের ওপর পড়ে যান। এ সময় অনুষ্ঠানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং লোকজন ছুটোছুটি শুরু করে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গুলি লাগার পর কার্কের ঘাড় থেকে রক্তপাত হচ্ছিল। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গুলি সম্ভবত পাশের কোনো ভবনের ছাদ থেকে ছোড়া হয়েছিল। সে সময় অনুষ্ঠানে ছিল প্রায় তিন হাজার মানুষ।
হত্যাকাণ্ডের পর ছয় ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আততায়ীর পরিচয় প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। এফবিআই জানিয়েছে, তারা এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে। আর ইউটাহর জননিরাপত্তা কমিশনার বউ ম্যাসন বলেছেন, খুনি এখনো পলাতক।
গভর্নর স্পেনসার কক্স সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনাটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।”
আর হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “যারা এ হত্যাকাণ্ডে কিংবা অন্য রাজনৈতিক সহিংসতায় যুক্ত, তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে— এমনকি যারা অর্থায়ন বা সহায়তা করছে, তাদেরও।”
কার্কের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের সব সরকারি ভবনে রোববার পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। গত বছর ট্রাম্পকে হত্যার জন্য দুই দফা চেষ্টা হয়েছিল। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান–উভয় দলের রাজনীতিকরাই গত কয়েক বছরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন।
মৃত্যুর সময় কার্ক ছিলেন তার ‘আমেরিকান কামব্যাক ট্যুর’ এর প্রথম অনুষ্ঠানে। এ অনুষ্ঠান এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে তিনি সাধারণত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি বিতর্কে অংশ নিতে পারেন।
নিহত হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে এক দর্শকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গণহত্যা নিয়ে আলোচনা করছিলেন কার্ক।
চার্লি কার্ক এবং তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় কনজারভেটিভ যুব সংগঠন। ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারে তরুণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল সংগঠনটি। ট্রাম্পও স্বীকার করেছিলেন, তার দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে কার্কের বড় ভূমিকা ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন কার্ক। তার অনুসারীর সংখ্যা ৫৩ লাখের বেশি। পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় পডকাস্ট ও রেডিও শো ‘দ্য চার্লি কার্ক শো’ পরিচালনা করতেন। ফক্স নিউজে তাকে অতিথি উপস্থাপক হিসেবেও দেখা গেছে।