আবারও মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জিকেই এলএনজি টার্মিনাল সম্প্রসারণ ও এলএনজি সরবরাহের কাজ দিয়েছে সরকার। নির্বাচন নিয়ে যেখানে ভিসা নীতি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে চলছে বিরাট উত্তেজনা।
সরকারের সাথে সম্পর্ক যাই হোক না কেন, ১৫ বছর ধরেই এলএনজি সরবরাহের কাজ পেয়ে আসছে এই কোম্পানি।কোম্পানিটি মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ করবে, অন্যদিকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে এলএনজি সরবরাহ করবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এক্সিলারেট এনার্জিকে কাজ দেওয়ার নথিপত্রে অনুমোদন দিয়েছে। এর বাইরে বিদ্যুৎ বিভাগ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও সেলার পাওয়ার,সার ও ভোজ্যতেল কেনার বেশ কয়েকটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতিত্ব করেন।এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশের এলএনজি খাতে যুক্ত রয়েছে। কোম্পানিটি গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানেও কাজ পাওয়ার চেষ্টা করছে।
এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে পেট্রোবাংলার তিনটি আলাদা আলাদা প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে এলএনজি আমদানির জন্য দুটি ড্রাফট অ্যাগ্রিমেন্ট ও একটি প্রস্তাবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করতে অনুমোদন দিয়েছে।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক মহেশখালীতে বিদ্যমান এলএনজির রিগ্যান ক্যাপাসিটি ৫০০ এমএমসিএফডি হতে ৬০০ এমএমসিএফডি বৃদ্ধি করে এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড (ইইবিএল) কর্তৃক এলএনজি টার্মিনালের বর্ধিতকরণ সংক্রান্ত “এলএনজি ব্যবহার চুক্তির খসড়া সংশোধনের দলিল” অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পেট্রোবাংলা কর্তৃক এক্সিলারেট গ্যাস মার্কেটিং লিমিটেড পার্টনারশিপের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে জানুয়ারি ২০২৬ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ০.৮৫ এমটিপিএ এবং ২০২৮ সাল থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত ১.০০ এমটিপিএ এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে নেগোসিয়েশন করা দরপ্রস্তাব চূড়ান্তকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা কর্তৃক ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১’-এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকে (২০২৩ সালের ২৩ তম) এলএনজি মেসার্স ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড সিঙ্গাপুরের কাছে থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৭.৫৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে। এতে মোট ৭৬২ কোটি ৩৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০ টাকা ব্যয় হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) পাঁচটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে দুটি আলাদা আলাদা প্রস্তাবে খুলনা বিভাগের জন্য ৪৯ হাজার বৈদ্যুতিক পোল বা খুঁটি কেনার প্রস্তাব রয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃক জামালপুর জেলার সদর উপজেলায় ১৮০ মেগাওয়াট (এসি) সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি বিউবো কর্তৃক মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় ১৩০ মেগাওয়াট (এসি) সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাব এবং ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিট রি-পাওয়ার্ড কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস টারবাইনের ক্ষতিগ্রস্ত কম্প্রেসার মেরামত সেবা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে টিসিবির জন্য ২৫৪ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে সয়াবিন তেল, রাইস ব্রান অয়েল এবং মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এখানে শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস এবং সিটি এডিবল অয়েল থেকে এসব তেল ও মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কমিটি টিসিবির জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সিটি এডিবল অয়েলের কাছ থেকে কেনার অনুমোদন দিয়েছে।
ক্রয় কমিটি রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতারের মুনতাজাত থেকে ৪র্থ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক প্রিল্ড ইউরিয়া সার কেনাসহ আরও কয়েকটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে।