‘পূর্ণ শক্তি’ নিয়ে ইসরায়েলি আক্রমণ ঠেকাতে হামাসের প্রস্তুতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ১০:১৪ পিএম

‘পূর্ণ শক্তি’ নিয়ে ইসরায়েলি আক্রমণ ঠেকাতে হামাসের প্রস্তুতি

ছবি: সংগৃহীত

অভিযান চালাতে গাজায় প্রবেশ করেছে বিপুল পরিমাণ ইসরায়েলি সেনা। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে এ অভিযান চালায়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তারা ইসরায়েলে ফেরেনি। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি আক্রমণ ঠেকাতে পূর্ণাঙ্গ শক্তি নিয়ে প্রস্তুত। 

বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, ইসরায়েল সরাসরি ঘোষণা না দিলেও তাদের স্থল অভিযান শুরু হয়ে গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনী শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জানিয়েছে, শুক্রবার ( ২৭ অক্টোবর) রাতে গাজায় প্রবেশ করা ইসরায়েলি সৈন্যরা এখনো সেখানে অভিযান চালাচ্ছে। 

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হ্যাগারি বলেন, ‘সৈন্যরা এখনো মাঠে রয়েছে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ‘আল-কাসাম ব্রিগেড এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধগোষ্ঠী ইসরায়েলি আগ্রাসন মোকাবিলায় পূর্ণাঙ্গ শক্তি নিয়ে প্রস্তুত। যেকোনো মূল্যে তাদের হামলা ব্যর্থ করে দেওয়া হবে।’

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে, গণহত্যার উদ্দেশ্যে চালিত ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪১৫। আহত হয়েছে আরও অন্তত ২০ হাজার ৫০০ জন।

আরও জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৭ হাজার ৩০৫ জনই গাজা উপত্যকার। হাজায় আহত হয়েছে ১৮ হাজার ৫৬৭ জন। বিপরীতে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে বিগত ২১ দিনে নিহত হয়েছে ১১০ জন। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১ হাজার ৯৫০ জন। নিহতদের মধ্যে ৩ হাজারেরও বেশি শিশু। নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু ও বয়স্ক।

বিদ্যুতের সংযোগ কিংবা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গাজার অভ্যন্তরে তো বটেই, গাজা থেকে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করারও কোনো পথ খোলা নেই। সব ধরনের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। 

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ প্রযুক্তি মানবাধিকারবিষয়ক গবেষক ডেবোরাহ ব্রাউন বলেছেন, গাজায় একপ্রকার কমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউট চলছে। 

গাজাবাসী নিজের প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। এমনকি চিকিৎসাসহ অন্য কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবাও গ্রহণ করতে পারছে না।

ডেবোরাহ ব্রাউন এ সময় ইসরায়েলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “এই ইনফরমেশন ব্ল্যাকআউটের ফলে ব্যাপক নৃশংসতা আড়াল করতে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য (ইসরায়েলের) দায়মুক্তিতে অবদান রাখার ঝুঁকি রয়েছে।”

মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে যে, “কমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউটের অর্থ হলো গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে সমালোচনামূলক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া আরও কঠিন হবে।”

Link copied!