ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ১২:১০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
মার্শাল ল’ জারি করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল দুঃখ প্রকাশ করে ‘ক্ষমা’ চেয়েছেন। বলেছেন, তিনি এ ধরনের আদেশ আর দেবেন না।
শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সামরিক আইন ঘোষণার পরপরই সম্ভাব্য অভিশংসনের মুখে পড়েছেন ইউন। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে শুক্রবার দফায় দফায় বৈঠক করেছে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বক্তব্যে ইউন বলেছেন, “আমি অত্যন্ত দুঃখিত এবং যারা মর্মাহত হয়েছেন, তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।”
মার্শাল ল’ ঘোষণার বিষয়ে তিনি কোনো আইনগত বা রাজনৈতিক দায় এড়াতে পারেন না বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
তার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টির (পি) নেতা হান ডং-হুন বলেন, “ইউনের পক্ষে স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তার আগাম পদত্যাগ অনিবার্য।”
বিবিসি লিখেছে, ইউনকে অভিশংসন করতে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বিরোধীদের। ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে রাষ্ট্রপ্রধানকে অভিশংসনের প্রস্তাব পাস করাতে দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন প্রয়োজন। আর সেজন্য ইউনের দলের অন্তত আটজনের ভোট প্রয়োজন বিরোধীদের।
বিরোধীদলীয় নেতা লি জায়ে-মিউং বলেছেন, শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ইউনের মন্তব্যে তিনি হতাশ। এতে জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়বে। বলেন, “প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে সরাতে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন।”
কয়েক দশকের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে মঙ্গলবার টেলিভিশনে দেওয়া আকস্মিক এক ভাষণে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্শাল ল’ জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।
উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হাত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সুরক্ষায় এবং রাষ্ট্রবিরোধী নানা শক্তিকে নির্মূল করতে এ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
পরে পার্লামেন্টের চাপের মুখে কয়েক ঘণ্টা পরই তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন ইওল। তার রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা এবং গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টাকে পার্লামেন্ট পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে।
পার্লামেন্টের ক্ষুব্ধ সদস্যরা একযোগে প্রেসিডেন্ট ইউনের জারি করা এ ডিক্রি প্রত্যাখ্যান করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানায়, বুধবার ভোর রাতেই মন্ত্রিসভা সামরিক আইন বাতিল করার বিষয়ে একমত হয়। এরপর বুধবার সকালে এমপিরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার আহ্বান জানান।