শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে জাতিসংঘের পঞ্চম বৈঠক শেষ হয়েছে। মন্ত্রী পর্যায়ের দুইদিনব্যাপী এই বৈঠকে ভবিষ্যতেও মিশন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন জানান অংশগ্রহণকারীরা। তবে কিছু সংস্কার প্রস্তাবও করা হয়েছে।
বুধবার ঘানার আক্রায় ৯১টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় ৭৫ বছর আগে গঠিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে এখন পর্যন্ত ১৫৮ দেশের ২০ লাখের বেশি শান্তিরক্ষী অংশ নিয়েছেন। তারা ৭১টি মিশনে কাজ করেছেন। বর্তমানে ডিআর কঙ্গো, সাউথ সুদান, পশ্চিম সাহারা ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালিত হচ্ছে।
অবশ্য অতীতে মিশনগুলো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, যেমন সুনামের ক্ষতি, অবিশ্বাস ইত্যাদি। যেমন মালি ও ডিআর কঙ্গোতে মিশনগুলো তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। বরং অনেক সময় তাদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। তাই এই দুই দেশই মিশন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। ইতিমধ্যে মালি থেকে শান্তিরক্ষীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে।
এসব কারণে শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনার প্রয়োজন আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে বৈঠকে মিশন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে।
শান্তিরক্ষা মিশন সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ-পিয়ের লাক্রোয়া ডিডাব্লিউকে বলেন, মিশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় ছিল। তাই বৈঠকে অংশ নেওয়া দেশগুলো যে মিশনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, সেটা প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, বিশ্বে বিভক্তি বাড়ছে, দ্বন্দ্বও রয়েছে এবং তা বহুগুণে বেড়ে চলেছে। এছাড়া যেসব জায়গায় মিশন চলছে তার বেশিরভাগ এলাকায় হুমকি ও নিরাপত্তা পরিবেশেরও অবনতি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
লাক্রোয়া জানান, শান্তিরক্ষীরা লাইবেরিয়া ও নামিবিয়া থেকে কম্বোডিয়া, সিয়েরা লিওন, তিমুর লেস্টেসহ অনেক দেশে শান্তি আনতে সহায়তা করেছেন। সহিংসতা প্রতিরোধ ও কমাতে এবং দিনের পর দিন চলতে থাকা যুদ্ধ বন্ধ করতে শান্তিরক্ষীদের রেকর্ড খুব ভালো বলেও জানান তিনি।
মিশনের প্রতি সমর্থন জানালেও বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রতিনিধার কিছু সংস্কার আনার প্রস্তাব করেন। ঘানার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহামাদু বাউমিয়া বলেন, ভবিষ্যতে শান্তিরক্ষা মিশন সফল হতে হবে সংস্কার অপরিহার্য।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আদিব সানি ডিডাব্লিউকে বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আফ্রিকায় শান্তিরক্ষা মিশন এখনও দরকার আছে। ‘আমি অস্বীকার করতে পারি না যে, আফ্রিকা একা এটা করতে পারে না। আমরা স্বাবলম্বী নই,’ বলেন তিনি।
বিশ্বাস ও সাফল্য পেতে তিনি শান্তিরক্ষা মিশনের সঙ্গে আরও বেশি করে স্থানীয়দের যুক্ত করার আহ্বান জানান। দ্বন্দ্ব সমাধান বিশেষজ্ঞ ফিদেল আমাকায়ে উসু মনে করেন, শান্তিরক্ষা মিশনের কাজের পরিধি আরও বাড়ানো যেতে পারে।