মিয়ানমারের সাবেক সরকারপ্রধান অং সান সু চি প্রথম বার আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আদালতে হাজির হওয়ার মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারি জান্তাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর প্রথমবার সু চি জনসম্মুখে আসলেন।
এর আগে মিয়ানমারের জান্তা সরকার তার বিরুদ্ধে জনসাধারণের মনে উদ্বেগ সৃষ্টির জন্য উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। পরবর্তী সময়ে সু চিসহ রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারে বিপর্যয় নেমে এসেছে, সর্বত্রই অশান্তি বিরাজ করছে। সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে ৭৬ বছর বয়সী অং সান সু চির বিরুদ্ধে আদালতে অসংখ্য অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তার বিচার চলছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে ফের বছরের পর বছর কারাগারেই দিন কাটাতে হতে পারে সু চিকে।
ফেব্রুয়ারিতে সু চির দল দুটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল। এতে সামরিক শাসনের নিন্দা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনকে তাদের সঙ্গে কাজ না করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এই ঘটনাকে উসকানি হিসেবে আখ্যা দিয়েই মূলত জান্তা সরকার সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। কিন্তু মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক আচরণের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অস্বীকার করেছেন সু চি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার আইনজীবী দলের এক সদস্য বলেন, সু চি খুব ভালোভাবেই নির্দোষ প্রমাণ করতে পেরেছেন। আইনজীবী এর বাইরে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। কারণ মামলার শুনানির বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের পর মিয়ানমারের নতুন সংসদ বসার আগে অং সান সু চি এবং বেসামরিক সরকারের সিনিয়র সদস্যদের আটক করে সামরিক বাহিনী।
এদিকে গত ১ জানুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ দমনে সাধারণ মানুষের ওপর ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করা হয়। চলমান সহিংসতায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে শিশুসহ এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
সূত্র: আলজাজিরা।