আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী-পুরুষ একসঙ্গে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাগ্রহণ বা সহশিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে দেশটিতে ক্ষমতাসীন তালেবান বাহিনী। দেশটিতে প্রণীত নতুন শিক্ষানীতির কথা উল্লেখ করে রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এদিন তালেবান সরকারের উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি প্রণীত নতুন শিক্ষানীতির বিষয়ের একটি পর্যালোচনা প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি বলেছেন, নারীর উচ্চশিক্ষায় বাধা নেই, তবে তা পুরুষের সঙ্গে বসে নয়। এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার সময় নারীদের অবশ্যই হিজাব পরতে হবে।
তালেবানের আগের সরকারের সময় (১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত) মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
কিন্তু এবার তালেবান জানিয়েছে, তারা নারীদের শিক্ষিত হওয়া এবং কর্মজীবন বেছে নেওয়া থেকে বিরত রাখবে না। তবে, ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পর শুধু স্বাস্থ্য খাতে কর্মরতদের বাদে সব কর্মজীবী নারীকে ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছিল তালেবান। নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত নারীরা যেন ঘরে থাকেন।
আবদুল বাকি হাক্কানি বলেন, ‘সহশিক্ষা বন্ধে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। জনগণ মুসলিম, তারা এটা গ্রহণ করবে।’
এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোতেও ছেলেমেয়েদের আলাদাভাবে ক্লাস নেওয়া হবে। যদিও আফগানিস্তানজুড়ে এখন এমন চিত্র খুবই সাধারণ।
সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ইসলামি মূল্যবোধ, জাতীয় ও ইতিহাস নির্ভর যৌক্তিক এবং ইসলামিক, আবার একই সঙ্গে অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো পাঠ্যক্রম তৈরি করতে চেয়েছে তালেবান।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকেই মনে করছেন, নতুন আইনে নারীরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদা ক্লাস নেওয়ার মতো অত বেশি নারী শিক্ষক নেই। যদিও নতুন আফগান উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী বলছেন, যথেষ্ট সংখ্যক নারী শিক্ষক রয়েছে। যেসব জায়গায় ঘাটতি আছে বিকল্প পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতার ওপর, আমরা পুরুষ শিক্ষকদের পর্দার আড়াল থেকে ক্লাস নেওয়াতে পারি অথবা প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি।’
গত শনিবার কাবুলে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে কালিমাখচিত সাদা পতাকা টানানোর পর গতকাল রোববারের উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রীর ঘোষণা এলো। প্রায় এক মাস আগে গত ১৫ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিদেশি সেনা সমর্থিত সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।
সূত্র: বিবিসি।