লটারিতে টিকিট কিনে এ দেশে কোটি টাকা পাওয়ার কথা আমরা জানি। কিন্তু কেউ যদি অর্ধশত কোটি টাকা একসাথে জিতে যান, সেটি তো জীবন পরিবর্তনকারী এক ঘটনা বটে! এরকমই এক লটারিভাগ্যবান হলেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশি যুবক আরিফ খান। আমিরাতেই তিনি বিরাট অঙ্কের ওই লটারি জিতেছেন। জেতার খবরের পর তিনি প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে যান! কারণ ৩৬ বছর বয়েসি আরিফ জীবনে কোনোদিন লটারির টিকিট কেনেননি। এটিই প্রথম।
স্থানীয় খবর খালিজ টাইমস ও গাল্ফ নিউজের খবরে বলা হয়, শুক্রবার সেখানে এক লটারির ড্রতে আরিফ জিতে নিয়েছেন ২ কোটি দিরহাম বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
শারজায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী আরিফ খান রাজধানী আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ‘মাইটি ২০ মিলিয়ন’ র্যাফেল ড্র-তে জীবন বদলে দেওয়া ওই অর্থ জেতেন। এ খবর জানার পর তিনি প্রথমে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারেননি।
আরিফ গত চার বছর ধরে শারজায় কাজ করছেন। লটারি কিনে ভাগ্য বদলানোর জন্য তিনি গত ২৭ মে জীবনে প্রথমবারের মতো একটি টিকিট কেনেন। খালিজ টাইমসকে ৩৬ বছর বয়সী আরিফ বলেন, ‘আমি শুধু আমার ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা করছিলাম। আমি আমার জীবনে আর কোনো লটারির টিকিট কিনিনি।’
বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রাইজমানি কত হবে জানতে চাইলে তিনি হিসাব করার চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দেন। পরে বলেন, ‘আমি জানি না। আমি যে ২০ মিলিয়ন দিরহাম জিতেছি, সে খবরেই এখনও ডুবে আছি।’
আরিফ রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা এবং শারজায় একটি গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের দোকান চালান। এত টাকা দিয়ে তিনি কী করবেন তা নিয়ে কোনো তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা করেননি বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমার কোনো পূর্বপরিকল্পনা নেই। আমি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই টিকিটের প্রচার দেখেছি এবং আগ্রহী হয়েছি। আমি আগে কখনও আমার ভাগ্য পরীক্ষা করিনি। আমি ১২ বছর সৌদি আরবে কাজ করেছি। আমার ব্যবসা সেখানে ধস নেমেছে। কিন্তু এখন সব ঠিক আছে।’
আরিফ একটি সুখী পরিবারের মানুষ। লটারির অর্থ তিনি অভাবী মানুষদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমার দুই সন্তান, আমার স্ত্রী এবং আমার বাবা-মা। আমার ভাই এখানে দোকান চালায়। আমি আশা করি, এই অর্থ অন্যদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। টাকা পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর জিনিস। তাই আমি অন্যদের সাহায্য করার জন্য এটি ব্যবহার করতে চাই। শুধু নিজের জন্য এই অর্থ ব্যবহার করতে চাই না।’