সরকারবিরোধী লংমার্চ চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। এ ঘটনায় বন্দুক হামলা চালানো এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদের আল্লাহ ওয়াল্লা চকে লংমার্চে সময় দুই হামলাকারী ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। এ সময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর গুলিতে এক হামলাকারী নিহত হন। অপর হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলি করে পালানোর সময় ইমরান খানের এক সমর্থক এক হামলাকারীকে জড়িয়ে ধরেন। পরে পুলিশ ওই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তবে ওই হামলাকারীর পরিচয় সম্পর্কে এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়তে পারেন-পাকিস্তানে সরকারবিরোধী লংমার্চে গুলিবিদ্ধ ইমরান খান
পাকিস্তানের ডন এবং ভারতের এনডিটিভিসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমরান খানকে গুলি করে পালানোর সময় গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তিনি ইমরান খানকে হত্যার জন্যই এখানেই এসেছেন।
কেন তিনি ইমরান খানকে হত্যা করতে চেয়েছেন-কর্মকর্তাদের প্রশ্নের জবাবে গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তি জানান, ‘ইমরান খান জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।’
হামলাকারী বলেন, ‘ইমরান খান মানুষদের বিভ্রান্ত করছিলেন। আমার কাছে এটি সহ্য হয়নি। তাই আমি তাকে গুলি করেছি। তাকে হত্যার চেষ্টা করেছি। আমি শুধু খানকেই গুলি করেছি, অন্য কাউকে নয়।’
এই হামলার পরিকল্পনার পেছনে অন্য কেউ ছিল কিনা জানতে চাইলে হামলাকারী বলেছে, ‘আমি হঠাৎ করে এই পরিকল্পনা করেছি। এর পেছনে অন্য কেউ নেই।’
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রধান ইমরান খান আগাম নির্বাচনের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন। এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত শুক্রবার থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লং মার্চ শুরু করেন তিনি। অঅর এতে বেজায় চটেছেন শাহবাজ প্রশাসন। শোনা যাচ্ছে ইমরান খানকে আটকও করতে পারে পাকিস্তানের বর্তমান সরকার।
এর মাঝেই গতকাল বুধবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, ইমরান খানকে আটক করা হলে কোন কারাগারে রাখা হবে সেটিও ঠিক করে ফেলেছেন তিনি। এমনকি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারের কোন ওয়ার্ডে রাখা হবে সে বিষয়েও জানান তিনি।
চলতি বছরের মার্চে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইমরান খান। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক এই ক্রিকেট অধিনায়ক প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর পর থেকেই বলে আসছেন ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রে’ তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। তারপর থেকেই আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে লংমার্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন তিনি।