কোরআন শরিফের কপি পোড়ানোর প্রতিবাদে উত্তাল গোটা সুইডেন। গত ৬ দিন ধরে চলছে প্রতিবাদ আর বিক্ষোভ। গত ১৭ এপ্রিল সুইডেনের কট্টরপন্থি কিছু লোক পূর্বপরিকল্পিতভাবে কোরআন শরিফের একটি কপি পোড়ানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এরপরই গোটা সুইডেন পরিণত হয় বিক্ষোভ আর প্রতিবাদের দেশে।
সুইডেনের কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদ রাসমুস পালুদান জানান, ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের কপি পুড়িয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে আরও কোরআনের কপি পোড়াতে চান। এ ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ।
বিক্ষোভ- সহিংসতায় ২৬ জন পুলিশ ও ১৪ জন সাধারণ নাগরিক আহত হয়েছেন। ২০টির বেশি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে।সুইডেনের পুলিশ বলছে, এ সংঘাতের নেপথ্যে ২০০ জনের মতো উগ্র জাতীয়তাবাদী লোক কাজ করেছে।
কোরআনের কপি পোড়ানোর ঘটনায় সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ নিন্দা জানিয়েছে। রিয়াদ জানায়, সুইডেনের কতিপয় উগ্রবাদী লোক ইচ্ছাকৃতভাবে পবিত্র কোরআনের অবমাননা করে মুসলিমদের প্রতি উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। এর আগে ইরান ও ইরাক সেদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে তীব্র নিন্দা জানান।
সুইডেনে কোরআনের কপি পোড়ানোর ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও এনিয়ে বিক্ষোভ-সংঘাত হয়েছে। ২০২০ সালে মালমোতে সংঘর্ষে দোকানপাটে ভাঙচুর চালানো হয় এবং গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।ওই সময়ে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় অংশ নিতে চেয়েছিলেন রাসমুস। তিনি তখন ডেনমার্কে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় সুইডিশ পুলিশ তাকে দেশে প্রবেশ করতে দেয়নি।
রাসমুস পালুদান একজন ডানপন্থী রাজনীতিবিদ। ডেনমার্কের স্ট্র্যাম কুরস পার্টির হয়ে ২০১৯ সালে নির্বাচন করেন। সেবার তিনি ১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।
ডেনমার্কে ২০২০ সালে এই পালুদান বর্ণবাদসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রায় এক মাস জেল খাটেন। আগামী সেপ্টেম্বরে সুইডেনের জাতীয় নির্বাচনে আবারও প্রার্থী হতে চাইছেন রাসমুস পালাড্যান। তবে ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য ন্যূনতম যে পরিমাণ ভোটারের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়, তা এখনও জোগাড় করতে পারেননি তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে ডানপন্থীদের বিশেষ করে সুইডিশ মাইগ্রেশনবিরোধীদের সমর্থন পেতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি-আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অভিমত এমনটাই।