নভেম্বর ২০, ২০২১, ১১:২৮ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের উসকনসিনে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করা এক কিশোরকে খালাস দিয়েছে দেশটির আদালত। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) আদালতের রায়ে কাইল রিটেনহাউস নামের সেই কিশোরকে খালাস দেওয়া হয়।
২০২০ সালে এক অ্যাসল্ট রাইফেল দিয়ে গুলি করে ৩৬ বছর বয়সী জোসেফ রোসেনবৌম, ২৬ বছর বয়সী অ্যান্থনি হুবারকে হত্যা করে রিটেনহাউস। আহত হয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী গেইজ গ্রোসক্রুয়েটজ।
এর আগে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জ্যাকোব ব্লেইক নামের এক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যা করে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা। তার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মার্কিন নাগরিকেরা।
সেসময় উইসকনসিনের কেনোসার সড়কে একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সশস্ত্র লোকজনের সঙ্গে সড়কে ঘোরাঘুরি করছিল রিটেনহাউস। তার হাতেও ছিল ভারী অ্যাসল্ট রাইফেল।
এ বিচারকে মার্কিন বিচার ব্যবস্থার জন্য পরীক্ষা হিসেবে দেখা হয়েছে। নিজেকে অনানুষ্ঠানিক একটি নজরদারি কমিটির সদস্য দাবি করা এক সশস্ত্র শ্বেতাঙ্গ কিশোর কিংবা ব্যক্তি এবং ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারের কৃষ্ণাঙ্গ সদস্যদের মুখোমুখি হয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কী ধরনের আচরণ করে, এ বিচারের মাধ্যমে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।
২০২০ সালের ২৫ আগস্ট এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল কেইল রিটেনহাউস। এই উচ্চ-মাত্রার ও রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টিকারী বিচারে তার আইনজীবী বলেন, সে জীবনের হুমকিতে রয়েছে। সেদিন রাতে সমস্যা খুঁজতে বের হয়েছিল ওই কিশোর।
বিক্ষোভ থেকে সম্পদ সুরক্ষার দাবি করেছিল রিটেনহাউস।
এদিকে, লোকজনকে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শান্তিপূর্ণভাবে তুলে ধরতে আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এমন এক সময় তিনি এই মন্তব্য করেন, যখন এই রায়ের কারণে বহু আমেরিকান নাগরিকের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ কাজ করছে।
তিনি বলেন, আমার মধ্যেও উদ্বেগ রয়েছে। কিন্তু বিচারক যা বলেছেন, তা অবশ্যই আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে।
রিটেনহাউসের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত মানুষ হত্যাসহ পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। ১২ ব্যক্তির জুরি তার ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন। তাদের মধ্যে সাত নারী ও পাঁচ পুরুষ ছিলেন। রায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে তারা তিন দিনেরও বেশি সময় নিয়েছিলেন।
বিচারের পর আদালত প্রাঙ্গণে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল জ্যাকোব ব্লেকের চাচাকে। রায় শুনে নিজের ব্যথিত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি আমাদের এক অগ্রহণযোগ্য বার্তা দিয়েছে। যাতে মনে হতে পারে যে, সশস্ত্র বেসামরিক লোকজনও যে কোনো শহরের রাস্তায় নেমে আসতে পারেন। তারা সহিংসতা উসকে দিতে পারেন এবং সড়কে মানুষকে গুলি করে হত্যার ন্যায্যতা দিতে নিজেদের তৈরি করা ঝুঁকি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।