ভারতের কলকাতায় ধর্মতলার ২১ জুলাই মহাসমাবেশে কী বার্তা দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-তা বেশ কয়েকদিন আগেই টের পেয়েছিলেন বা ধারণা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা দেশের মানুষ। শুক্রবার মহাসমাবেশে তাই-ই সত্যি হলো।
দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে লোকসভা ভোটে দলের রণকৌশল নিয়ে বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সমাবেশে তিনি বললেন, “২০২৪ সালে নতুন ইন্ডিয়ার জন্ম হবে। বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেবেন সাধারণ মানুষ।” এসময় তিনি চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
শুক্রবার ২১ জুলাইয় ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে আয়োজিত মহাসমাবেশে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দলীয় কর্মীরা জড়ো হন। কলকাতার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও ভোরের আলো ফুটতেই ধর্মতলার ভিক্টোরয়া হাউসের কাছে পৌঁছে যান।
ভেভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক লাখ লোকের সমাবেশে জড়ো হন। তাদের সামনেই আগামী ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী জানান, “খুব শীঘ্রই বাংলার নিজস্ব টাকায় ১০০ দিনের কাজের একটি প্রকল্প শুরু করা হবে। এই প্রকল্পের নাম ‘খেলা হবে’ বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মহাসমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাদেশিক মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার কলকাতা শহরের একাংশে বিপুল জনসমাগমের কারণে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। বন্ধ ছিল কলকাতার একাধিক বাস রুট। ২১ জুলাই কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ধর্মতলায় তৃণমূলের সমাবেশে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এসেছেন। তাই শহরের বাইরে থেকেও প্রচুর বাস ঢুকেছে কলকাতায়। সকালে তৃণমূল কর্মীদের আসা এবং দুপুরের পরে ফিরে যাওয়া। এর ফলে রাস্তাঘাট গোটা দিনই ভিড়ে ভারাক্রান্ত ছিল।
আমি চ্যালেঞ্জ নেওয়া লোক: মমতা
সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “চারদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। কিন্তু চারিদিকে দাঙ্গার নামে ভাগাভাগির চেষ্টা করছে বিজেপি।”
বিজেপির বিরুদ্ধে মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ নেওয়া লোক। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। ত্রিপুরায় রথযাত্রায় ২৬ জন মারা গেলেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় কত মানুষ মারা গেলেন। নমামি গঙ্গে প্রকল্পকেন্দ্রে কত জন দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। আমি কিন্তু কিছু বলিনি। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করি না। কিন্তু বাংলাতে কেউ মারা গেলেই রাজনীতি শুরু করছে বিজেপি।”
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘“২০২৪ সালে নতুন ইন্ডিয়ার জন্ম হবে। বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেবেন সাধারণ মানুষ। মণিপুরের মহিলাদের যে ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিজেপি সরকারের লজ্জা হওয়া উচিত।’”
পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, “ইন্ডিয়া লড়বে। পাশে সৈনিকের মতো ঝান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে তৃণমূল। ইন্ডিয়াকে জিততে হবে। বিজেপি হারলে ভারত জিতবে।”