জুন ১৬, ২০২৩, ০২:৫৯ পিএম
আরব সাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ ভারতের গুজরাট রাজ্যের উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসার পর দুর্বল হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। ‘অতি প্রবল’ থেকে ‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। তবে এর তাণ্ডবে বহু বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ উপড়ে পড়েছে। অন্তত ২ জনের মৃত্যু ও ২২ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ জেলার উপকূল দিয়ে ‘বিপর্যয়’ স্থলে উঠে আসে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি রাজস্থানে উপস্থিত হওয়ার পর দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, “ঘূর্ণিঝড়টির তীব্রতা কমে এর একটানা বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার থেকে ১১৫ কিলোমিটারে নেমে এসেছে।”
গুজরাটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘বিপর্যয়’ এর প্রভাবে রাজ্যজুড়ে ভারি বৃষ্টি ও দমকা বাতাসসহ ঝড় বইছে, বিভিন্ন স্থানে ৫২৪টি গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়েছে; এতে প্রায় ৯৪০টি গ্রাম বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে , রাজ্যের ভাবনগর জেলায় নিজেদের ছাগলের পালকে রক্ষা করতে গিয়ে এক পশুপালক ও তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
আরব সাগরের মধ্য দিয়ে ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে এগিয়ে অবশেষে গুজরাটের জখৌ বন্দরের কাছ দিয়ে স্থলে উঠে আসে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। স্থলে উঠে আসার সময় এর বাতাসের একটানা বেগ ঘণ্টায় ১২৫ থেকে ১৪০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত আড়াইটার দিকে এটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার একটানা বাতাসের বেগ নিয়ে বইছিল, যা দমকা বাতাসসহ ঝড়ো হওয়া আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠছিল।
ঘূর্ণিঝড়টি উত্তরপশ্চিমে রাজস্থানের দিকে এগিয়ে শুক্র ও শনিবার সেখানে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণ হতে পারে বলে ড. মহাপাত্র জানিয়েছেন।
গুজরাট সরকার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতিতে তারা রাজ্যের উপকূলীয় ও নিম্নাঞ্চলগুলো থেকে ৯৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে এনে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে তোলে।
‘বিপর্যয়’ এর কারণে রাজ্যটি ট্রেন পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়েছে। প্রায় ৯৯টি ট্রেন যাত্রা বাতিল বা স্বল্প সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ে জানিয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত মাছ ধরার সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সমুদ্র বন্দরগুলোর কার্যক্রমও বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জাহাজগুলো নিরাপদ স্থানে নোঙর করে আছে।
গুজরাটের জামনগর বিমানবন্দর থেকে বাণিজ্যিক ফ্লাইটের চলাচল শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।