ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২, ১২:৫৩ এএম
দেশে দেশে গণতন্ত্র কায়েম ও দারিদ্র দুরীকরণের লড়াইয়ের কথা বললেও মার্কিন প্রশাসনের কথায় এবং কাজে মিল পাওয়া যায় না কখনোই। নানা বিতর্কিত কাণ্ড করে বরাবরই আলোচনায় থাকে বিশ্বমোড়ল দেশটি। আবারও একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসন বলেছে, তাদের দেশে আটকে থাকা আফগানিস্তানের ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের (৫৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) সম্পদের অর্ধেক ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে তারা। বাকিটা খরচ করবে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে চরম আর্থিক সংকটে থাকা মানুষের সহায়তায়।
আফগানদের ওই অর্থ স্থানীয় সময় শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের পতনের পর নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে জমা থাকা ওই অর্থ আটকে দেওয়া হয়।
গত আগস্টে পশ্চিমা–সমর্থিত দুর্নীতিবাজ আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান। ওই মাসেই আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যায় দেশটিতে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অবস্থান করা মার্কিন সেনারা। এরপর তালেবান সরকার গঠন করে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখলেও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি।
বাইডেনের অর্থ জব্দের সিদ্ধান্তের বিষয়ে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা জানান, আফগানিস্তানের জব্দ করা অর্থের মধ্যে ৩৫০ কোটি ডলার আফগানদের মানবিক সহায়তার জন্য গঠন করা তহবিলে যুক্ত করার অনুমতি চাইবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাকি অর্থ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাখা হবে।
একই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউসও। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলছে, জব্দ করা আফগান অর্থ নিয়ে মার্কিন আদালতে মামলা চলছে। ৯/১১ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা ওই অর্থের দাবি করে মামলাটি করেছিলেন। এ কারণে ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ যুক্তরাষ্ট্রেই রাখা হবে।
কাবুলের পতনের পর শুধু যুক্তরাষ্ট্রই আফগানদের অর্থ আটক করেনি; বিভিন্ন সংস্থা স্থগিত করে আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তাও। এর মধ্যেই দেশটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র খরা। সব মিলিয়ে চরম আর্থিক সংকটে রয়েছেন আফগানরা। দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। গত মাসে জাতিসংঘ জানায়, ৯৫ শতাংশ আফগানের খাওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য নেই।
সূত্র: বিবিসি