যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ৮, ২০২২, ১১:০৪ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন

যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পর্কে নিজেদের মনোভাব জানাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন। 

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দেশটির জনগণ এই ভোটগ্রহণে অংশগ্রহণ করছেন। আগামী দুবছর বাইডেনের শাসন কেমন যাবে তা নির্ভর করছে এই নির্বাচনের ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন চার বছরের জন্য। দুই বছর পর অনুষ্ঠিত হয় মধ্যবর্তী নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও সংসদীয় ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই মধ্যবর্তী নির্বাচন মূলত ক্ষমতা ধরে রাখা আর জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের অংশ। 

নির্বাচনকে ঘিরে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠা। নির্বাচনের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কায় সারা দেশে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৮ অক্টোবর স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির স্বামীর উপর সন্ত্রাসী হামলার পর পুলিশসহ সকল গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে সরকারের “রেড এ্যালার্ট” নোটিস পাঠানো হয়।

কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে সমতা রয়েছে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের মধ্যে। একটি আসন হারালেই কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ হারাবে ডেমোক্রেটরা। ফলে আগামী দুই বছর বাইডেনের জন্য হবে অত্যন্ত খারাপ সময়।

এ নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীদের সমর্থনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেন। জনগণকে তারা দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক আগে জনপ্রিয়তা ফিরে পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। রয়টার্স-ইপসোস পরিচালিত এক জনমত জরিপে দেখা গেছে-৪০ শতাংশ মার্কিনি বাইডেনের পারফরম্যান্সে খুশি। জুনের শুরুর দিকে থেকে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। 

দুদিনের জরিপে দেখা গেছে, এতে অংশ নেয়া ৭৮ শতাংশ সমর্থক বাইডেনের ওপর খুশি। গত মাসে এ সংখ্যা ছিলো ৬৯ শতাংশ। গত বছর আগস্ট থেকে বাইডেনের জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে ছিলো। তখন থেকে তা ৫০ শতাংশের নিচে চলে যায়। সবচেয়ে বেশি নেমেছিল এ বছর মে মাসে ৩৬ শতাংশে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং কোভিড-১৯ মূলত এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। অপরদিকে, গ্যালাপের জরিপে দেখা গেছে-মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। রিপাবলিকান প্রার্থীরা বিজয়ী হলে পরবর্তী নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে।

নির্বাচনের আগের জরিপগুলোও বাইডেনের পক্ষে ওঠানামা করেছে। এছাড়া কংগ্রেসের স্পিকারের পরিবারের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয় মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। বিপরীতে কিছু সিদ্ধান্ত যেমন- ৭ আগস্ট সিনেটে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে একটি ঐতিহাসিক বিল অনুমোদন পায়। এর সঙ্গে ওষুধের মূল্যহ্রাস এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে করপোরেট কর বাড়ানোর প্রস্তাব রেখে করা বিলেও অনুমোদন দেন সিনেটররা।

সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেস গঠিত। কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৫৩৫ জন। এর মধ্যে সিনেটের সদস্য ১০০ জন, বাকিরা প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য দুজন করে সিনেট সদস্য নির্বাচিত করে, যারা সিনেটর হিসেবে পরিচিত এবং ছয় বছরের জন্য তারা নির্বাচিত হন। প্রতি দুই বছর পরপর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনে নির্বাচন হয়। এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ১০০টি আসনের মধ্যে ৩৫টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ৪৩৫। প্রত্যেক সদস্য অঙ্গরাজ্যের একটি নির্দিষ্ট ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা দুই বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন।

সূত্র: এপি, এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।

Link copied!