জুলাই ৮, ২০২২, ১০:৩৬ পিএম
দেশে-বিদেশে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তার রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ১৯৫৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক সম্ভ্রান্ত রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেন আবে। তার দাদা ও চাচাও জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বাবা ছিলেন ডানপন্থী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) সাবেক মহাসচিব।
আবে টোকিওর সেইকি ও দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তবে ১৯৭৯ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত স্টিল নামের একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি। ১৯৮৭ সালে আকেই মাৎসুজাকিকে বিয়ে করেন আবে। মাৎসুজাকি তখন রেডিও জকির কাজ করতেন। আবের স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় তার স্বামীর বিরোধিতা করতে দেখা গেছে।
আবে প্রথম ১৯৯৩ সালে জাপানের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৩৮ বছর। ২০০০ সালে তিনি বেশ কিছু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করেন ও ২০০৩ সালে এলডিপির মহাসচিব হন। এর চার বছর পর আবে দলটির প্রেসিডেন্ট হন। এরপরই জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন।
২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন শিনজো আবে। ২০০৭ সালে তিনি দল ও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন। এরপর পাঁচ বছরে বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সবশেষ ২০২০ সালে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
জাপানের অর্থনীতিতে আবের ভূমিকা অনেক। তার সময়কার অর্থনীতি আবেনোমিক্স নামে পরিচিত। এই তত্ত্বের তিনটি মূল লক্ষ্যমাত্রা হলো - মুদ্রানীতি শিথিলকরণ, রাজস্ব নীতির সংস্কার এবং কাঠামোগত সংস্কার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইকোনমিস্ট এই ব্যবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি, সরকারি ব্যয় ও প্রবৃদ্ধির কৌশলের মিলবন্ধন বলে অভিহিত করে। আবেনোমিক্সের মধ্যে রয়েছে নেতিবাচক স্বল্পমেয়াদী সুদের হার যা ভোক্তা এবং কোম্পানিগুলির জন্য অর্থ ধার করা সহজ করে তোলে। এছাড়া অবকাঠামোতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও আরও আর্থিক প্রণোদনা দেন আবে।
১১টি দেশের মধ্যে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) নামে বাণিজ্যিক চুক্তির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হন আবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রকে এ চুক্তি থেকে বের করে নেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুক্রবার (০৮ জুলাই) জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় নারা শহরে প্রচার কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় আবেকে গুলি করা হয়। চিকিৎসকদের সাড়ে চার ঘণ্টার চেষ্টায়ও তাকে বাঁচানো যায়নি।