মিয়ানমারে জান্তা শাসন বিরোধিতার অংশ হিসেবে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিদ্যুৎ বিল বয়কট করায়, প্রায়ই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ছে সেখানকার জনজীবন। এর প্রভাবে করোনায় বিপর্যস্ত দেশটির স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। রবিবার (২৫ জুলাই) দেশটির সংবাদমাধ্যম নিক্কে এশিয়ার বরাতে এ তথ্য জানা যায়।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত দেশটির স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘন ঘন লোড শেডিং হওয়ায় চরম হুমকিতে পড়েছে সেখানকার জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
গত ফেব্রুয়ারির সেনা অভুত্থানের বিরোধিতা করে মিয়ানমারে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শহরের অনেক বাসিন্দাই বিদ্যুৎ বিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
নিক্কেই এশিয়া ও অর্থনীতিবিদদের সংগঠন ইন্ডিপেনডেন্ট ইকোনমিস্ট ফর মিয়ানমারের (আইইএম) তথ্য মতে, গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব আয় ৯০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।
লোড শেডিংয়ের কারণে দেশটির সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সার্বক্ষণিক জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। কিন্তু, মিয়ানমারে জ্বালানি তেলের দামও বৃদ্ধি পাওয়ায় জেনারেটর চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে।
অভুত্থানের পর বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় 'বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো সচল রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সরকার সহযোগিতা করতে পারছে না। বিদ্যুতের দাম ও সরবরাহও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না।'
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অভুত্থানের আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে কর্মী ছিলেন প্রায় ৫০ হাজার। অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত চার হাজার ৫৮ জন সামরিক স্টাফকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই বিল সংগ্রহ ও কারিগরি সহযোগিতা দিতেন। এই বিরাট আকারের কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রভাব মন্ত্রণালয়ে পড়েছে।
আইইএম জানিয়েছে, বিল বয়কট চলমান থাকলে চলতি বছরে দেশটির বিদ্যুৎ খাতে মন্ত্রণালয়টির ক্ষতি হবে দুই থেকে আড়াই ট্রিলিয়ন কিয়াত বা ১ দশমিক ২ বা দেড় বিলিয়ন ডলার। এটি মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বার্ষিক রাজস্ব আয়ের ১০ শতাংশ।
সূত্র: নিক্কে এশিয়া।