শান্তিনিকেতনে ‘প্রতীচী’ নামে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়ির মোট জমির পরিমাণ ১৩৮ শতাংশ। অমর্ত্য সেনের দাবি তাঁর বাবা আশুতোষ সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়েছিলেন; কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি- ওই জমির মধ্যে ১৩ শতাংশ জমি অমর্ত্য সেন বেদখল করে রয়েছেন। ওই জমি সেন পরিবারকে লিজ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিতর্ক।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
অমর্ত্য সেনকে আগামী ৬ মে তারিখের মধ্যে শান্তিনিকেতনের জমি ছাড়ার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যথায় বলপ্রয়োগ করে হলেও জমির দখল বুঝে নেবে কবিগুরুর হাতে গড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।
বেশ কয়েক দফায় বিতর্কিত জমি ফেরানোর নোটিশ দেওয়া হলেও এটা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয় যখন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্য সেনের বাড়ি গিয়ে নিজের হাতে রাজ্য সরকারের ভূমি ও রাজস্ব দপ্তর থেকে অমর্ত্য সেনের নামে ১.৩৮ একর জমির খতিয়ান তুলে দেন।
উল্লেখ্য বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান তাই শান্তিনিকেতনের জমিও তাদেরই। এ কারণে তীব্র বিরোধের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশ্বভারতী এবং অমর্ত্য সেনের মধ্যে তিন দফায় সালিশি বৈঠকও হলেও কোনো ধরনের সমাধান মেলেনি। কারণ দুপক্ষই নিজেদের জমির দাবিতে অনড়।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) গভীর রাতে শান্তিনিকেতনের অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র দেয়ালে নোটিশ টাঙায় বিশ্বভারতী। নোটিশে বলা হয়- আগামী ৬ মে পর্যন্ত চূড়ান্ত সময় দেওয়া হলো। এর মাঝে বিতর্কিত ১৩ শতাংশ জমি ছাড়তে হবে। অন্যথায় বল প্রয়োগ করে বিশ্বভারতী তাদের জমি বুঝে নেবে।
যদি সত্যি অমর্ত্য সেন জমি ফেরত না দেন তবে বুলডোজার দিয়ে কথিত দখল করা জমি ফেরত নিতে পারে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যদিও ওই বাড়ির সামনে রাজ্য প্রশাসন ১৪৫ ধারা জারি করে রেখেছে; যাতে সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
তবে বর্তমানে শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়ি প্রতীচীতে নেই অমর্ত্য সেন। তিনি রয়েছেন তাঁর ইউরোপের কর্মস্থলে।
অমর্ত্য সেনের মাস দুয়েক আগে করা মন্তব্য- ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের যোগ্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ হতে পারেন’ তোলপাড় ফেলে দেয়। তৃণমূল খুশি হলেও বেজায় চটে বিজেপি শিবির। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন তারই প্রভাব পড়েছে অমর্ত্য সেন বনাম বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এ লড়াইয়ে। বিষয়টি বিশ্বভারতী ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গে শাসকদের লড়াইয়ের ছোঁয়া পেয়েছে।