সবার চোখ মমতার দিকে, কী বলবেন ২১ জুলাই?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুলাই ২০, ২০২৩, ১১:২২ পিএম

সবার চোখ মমতার দিকে, কী বলবেন ২১ জুলাই?

তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগৃহীত ফাইল ছবি

ভারতের কলকাতা শহর এখন উৎসবমুখর নগরীতে পরিণত। তৃণমূলের মহাসমাবেশ উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বাধভাঙা উচ্ছ্বাস। ২১ জুলাই ধর্মতলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে তৃণমূলের মহাসমাবেশ। দলটির নেতা-কর্মীদের দাবি, স্মরণকালের এ মহাসমাবেশে ভাষণ দেবেন পশ্চিমবঙ্গের মা, মাটি ও মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষণে উঠে আসতে পারে আগামী সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষ্যে দলীয় কর্মসূচি।

ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের এই মহাসমাবেশ এখন টক অব দ্য কান্ট্রিকে পরিণত হয়েছে। কারণ মমতা শুধু আর তৃণমূল নেত্রী নন, ‘ইন্ডিয়া’র নেত্রী- অর্থাৎ ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্সের নেত্রী। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে কংগ্রেসসহ দেশের ২৬ টি বিরোধী দল মিলে নতুন এই জোট করা হয়। সেই জোটের অন্যতম প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাবেশে কী বলবেন, তা শোনার জন্য অধীর হয়ে আছেন ‘ইন্ডিয়া’র নেতারাও।

প্রতিবছরই ২১ জুলাই মহাসমাবেশ করে থাকে তৃণমূল কংগ্রেস। এই দিনের সাথে একটা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে তৃণমূলের। সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবিতে ১৯৯৩ সালের এদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মহাকরণ অভিযানের ডাক দেন তখনকার যুব কংগ্রেস দলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি চালালে ১৩ জন কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়। দিনটিকে স্মরণীয় করতে তাই কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

মহাসমাবেশে কী বলবেন মমতা? কীসের ডাক দিবেন ক্ষমতাসীন তৃণমূল প্রধান? দলটির নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, ২০২৪ সালের ভারতের সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক দিক নির্দেশনা দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিতে পারেন ‘রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি হঠাও’ ডাক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে তাই এবারের ২১ জুলাই জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি শিবিরের একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে। তবে ২১-এর বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের ফল, পরবর্তী সময় জুড়ে একাধিক উপনির্বাচনের ফল, সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল জোড়া ফুল শিবিরের দিকেই গেছে। এই আত্মবিশ্বাসকে সামনে রেখেই এবারের ২১ জুলাই সমাবেশের আয়োজন হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে।  

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর ২১ জুলাই সমাবেশ করতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। ওই দুই বছর ভার্চ্যুয়ালি সমাবেশ করেছিল দলটি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার সমাবেশে নিজেদের শক্তি বোঝাতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। অন্তত বিজেপিকে দেখাতে চায়-পশ্চিমবঙ্গে জোড়া ফুলই মানায়, পদ্মফুল নয়।

২০১৪ সাল থেকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তৃণমূলসহ বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, জনগণের বিভিন্ন দাবি আদায়ে যখন তারা আন্দোলনে নামেন, তখন নরেন্দ্র মোদির ইশারায় আইনশঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরা হয়ে যান পেটোয়া বাহিনী। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের মহাসমাবেশ থেকে তাই নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধেও বার্তা দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, আসছে সাধারণ নির্বাচনে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলোর মধ্যে তৃণমূলকে এগিয়ে রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাছাড়া, জোটে নিজের অবস্থানকে অন্যদের থেকে আরও শক্তিশালী করতে চান তিনি। আর এটা প্রমাণ করাতে নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনার পাশাপাশি তিনি নতুন কর্মকৌশল ঠিক করতে পারেন। শরিক জোটের নেতারাও দেখতে চাইছেন-মোদি বা বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি কতটা আস্থাশীল। এসব কারণে মমতার ২১ জুলাই সমাবেশকে গুরুত্বের সাথে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।

Link copied!